বাংলাদেশি অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করতে টাস্ক ফোর্স গঠন হল ত্রিপুরায়। ছবি: রয়টার্স।
ত্রিপুরায় অবৈধ ভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের চিহ্নিত করতে গঠন করা হল বিশেষ টাস্ক ফোর্স। পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় পুলিশের ওই টাস্ক ফোর্সে থাকছেন ১৫ জন সদস্য। বাংলাদেশ এবং মায়ানমার থেকে আসা অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করে তাঁদের ‘ডিপোর্ট’ (দেশ থেকে বিতাড়ন) করার লক্ষ্যেই এই টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে এনই’-র প্রতিবেদন অনুসারে, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার পুলিশ সুপার কিরণ কুমারের নির্দেশে ওই টাস্ক ফোর্সটি গঠন করা হয়েছে। টাস্ক ফোর্সে রয়েছেন ওই জেলার ১৫টি থানার ওসি। জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার ডেপুটি সুপার দেবাশিস সাহার নেতৃত্বে এই প্রতিনিধিদল কাজ করবে। ওই প্রতিবেদন অনুসারে, সরকারি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, যথাযথ তদন্তের পরে কেউ অবৈধ ভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশি বা রোহিঙ্গা হিসাবে শনাক্ত হলে, তাঁদের বায়োমেট্রিক (আঙুলের ছাপ এবং মুখের ছবি) এবং অন্য তথ্য সংগ্রহ করা হবে। তার পরে সেটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক নিয়ন্ত্রিত বিদেশি শনাক্তকরণ পোর্টালে আপলোড করতে হবে। এর পরে তাঁদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর হাতে তুলে দেওয়া হবে।
নজরদারি ঠিকঠাক চলছে কি না, তা নিশ্চিত করতে নির্দিষ্ট সময় অন্তর এই সংক্রান্ত তথ্যও নথিভুক্ত করা হবে। প্রতি সপ্তাহে, প্রতি দু’সপ্তাহে এবং প্রতি মাসের পরিসংখ্যান নথিভুক্ত করে রাখতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিনা নথিতে থাকা বাংলাদেশিদের ধরপাকড় শুরু হয়েছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদেরও ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। বিশেষ করে ওড়িশা, মহারাষ্ট্র-সহ বিজেপিশাসিত কিছু রাজ্য থেকে এই ধরনের অভিযোগ উঠে এসেছে। পশ্চিমবঙ্গের কয়েক জন পরিযায়ী শ্রমিককে ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে ধরে বাংলাদেশে পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছিল। পরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে তাঁদের আবার দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বার বার এই নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। মহারাষ্ট্রের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে গত মাসেই রাজ্যের বিধানসভা অধিবেশন এ নিয়ে বিজেপিকে দুষেছিলেন মমতা। সম্প্রতি বাঙালিদের উপর নিপীড়নের অভিযোগ তুলে ওড়িশার সরকারকে চিঠিও পাঠিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। অভিযোগ, শুধুমাত্র মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলার জন্যই পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে বৈধ নথিপত্র দেখানোর পরেও তাঁদের হেনস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। গত বুধবার কলকাতায় এই অভিযোগে মিছিলও করেছেন মমতা। কেন্দ্র এবং বিজেপিশাসিত রাজ্য সরকারগুলির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন তিনি। এরই মধ্যে অপর এক বাংলাভাষী রা়জ্যে বাংলাদেশ এবং মায়ানমারের অবৈধবাসীদের শনাক্ত করতে বিশেষ দল গঠন করল পুলিশ।