ভারত সফরে আফগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। ছবি: পিটিআই।
আফগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির আগরা যাওয়ার কথা ছিল রবিবার। সেই সফর বাতিল হল বলে জানিয়েছে প্রশাসনিক সূত্র। কেন তা হল, সে বিষয়ে কিছু জানায়নি আগরার প্রশাসন। আগরায় তাজমহল দেখার কথা ছিল মুত্তাকির। পরিবর্তে রবিবার দিল্লিতে আবার একটি সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছেন মুত্তাকি। সেখানে এ বার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে মহিলা সাংবাদিকদের। শুক্রবার মুত্তাকি যে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন, তাতে মহিলাদের দেখা যায়নি। সেই নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। তার মাঝেই আবার সাংবাদিক বৈঠক ডাকলেন তালিবান মন্ত্রী।
ছয় দিনের সফরে বৃহস্পতিবার ভারতে এসেছেন মুত্তাকি। শুক্রবার দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন তিনি। সেখানে মহিলা সাংবাদিকদের উপস্থিত থাকতে দেখা যায়নি। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম দাবি করে, মহিলাদের সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সেই নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানায় এডিটরস গিল্ড অফ ইন্ডিয়া এবং ভারতীয় মহিলা প্রেস কোর (আইডব্লিউপিসি)। তারা এই ঘটনাকে ‘লিঙ্গ বৈষম্য’ বলে উল্লেখ করেছে। এই নিয়ে আফগানিস্তানের দূতাবাসের সঙ্গে বিদেশ মন্ত্রককে কথা বলার আর্জিও জানিয়েছে আইডব্লিউপিসি।
এই ঘটনায় সুর চড়ায় কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি। তালিবান আফগানিস্তানে যে গোঁড়া, রক্ষণশীল, লিঙ্গবৈষম্যমূলক শাসনব্যবস্থা চালায় বলে অভিযোগ, তার প্রতিফলনই ভারতে দেখা গেল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। বিতর্কের মুখে শনিবার একটি বিবৃতি দিয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানায়, বিষয়টিতে তাদের কোনও হাত নেই। প্রসঙ্গত, অন্য দেশে অবস্থিত হলেও দূতাবাসের ভিতরে কী হবে, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে সংশ্লিষ্ট দেশের। এ ক্ষেত্রে যেমন আফগানিস্তানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার রয়েছে। এই বিতর্কের মাঝেই রবিবার নতুন করে সাংবাদিক বৈঠক ডাকলেন মুত্তাকি। এ বার সেখানে উপস্থিত থাকতে পারবেন মহিলারাও। সে জন্যই আগরা সফর মুত্তাকি বাতিল করলেন কি না, তা যদিও স্পষ্ট নয়।
শনিবার মুত্তাকি গিয়েছিলেন দেওবন্দের দারুল উলুমে। দক্ষিণ এশিয়ায় মুসলিমদের বিশিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেটি। দারুল উলুমের সঙ্গে একটি যোগ রয়েছে তালিবানদের। তালিবানের অনেক শীর্ষ কমান্ডার পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার দারুল উলুম হাক্কানিয়ায় পড়াশোনা করেছেন। দেওবন্দের আদর্শেই গড়ে তোলা হয়েছিল সেই প্রতিষ্ঠান। হাক্কানিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মৌলানা আবদুল হক। তিনি নিজেই দেওবন্দের দারুল উলুমে পড়াশোনা করেছিলেন। সেখানে পড়িয়েও ছিলেন। সে কারণে দেওবন্দে যান মুত্তাকি। তার পরে রবিবার সকালে তাজমহল দেখলে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। সেই সফরই বাতিল হল।