ধৃত ‘সিরিয়াল কিলার’ অজয় লাম্বা। ছবি: সংগৃহীত।
বন্ধুরা মিলে ট্যাক্সি ভাড়া করতেন। ঘুরতে ঘুরতে নির্জন স্থানে নিয়ে যেতে বলতেন চালককে। তার পরে সুযোগ বুঝে গাড়ির মধ্যেই চালককে শ্বাসরোধ করে খুন করে ফেলে দিতেন! পাচার করে দিতেন ট্যাক্সি। একই ছকে ট্যাক্সিচালকদের নিশানা করত ওই গ্যাং। সেই গ্যাংয়ের মাথাকে ২৪ বছর পর গ্রেফতার করল পুলিশ।
দিল্লি পুলিশের অপরাধদমন শাখার হাতে এই (সিরিয়াল কিলিং) মামলার তদন্তভার ছিল। দুই দশকের বেশি সময় ধরে ওই চক্রের মূল পান্ডা অজয় লাম্বা গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন। অবশেষে তাঁকে ধরল পুলিশ। সূত্রের খবর, ওই গ্যাং ট্যাক্সি ভাড়া করে উত্তরাখণ্ডে যেত। তার পরে নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে চালককে খুন করত। পরে দেহ খাদে ফেলে দিয়ে ট্যাক্সি নিয়ে পালাত তারা। ওই ট্যাক্সি সীমান্তের ও পারে নেপালে পাচার করে দিত ওই গ্যাং। এই ভাবে পর পর চারটি একই ধরনের খুন-ডাকাতির অভিযোগ জমা পড়েছিল পুলিশের কাছে। সেই মামলার তদন্তে নেমে আগেই ওই গ্যাংয়ের দু’জনকে গ্রেফতার করেছিলেন তদন্তকারীরা। তবে অধরা ছিলেন গ্যাংয়ের মাথা।
দিল্লি পুলিশের ডিএসপি আদিত্য গৌতম বলেন, ‘‘২০০১ সালের ঘটনা। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড জুড়ে ট্যাক্সিচালকদের নিশানা করত ওই গ্যাং। অভিযুক্ত তাঁর সহযোগীদের সঙ্গে মিলে ট্যাক্সিচালকদের খুন করে তাঁর ট্যাক্সি নেপালে বিক্রি করে দিতেন।’’ মৃত চালকদের মধ্যে এক জনের দেহ উদ্ধার করা গিয়েছিল বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
৪৮ বছর বয়সি অজয় দিল্লির বাসিন্দা। ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে স্কুল ছেড়ে দেন তিনি। পরে দিল্লি ছেড়ে উত্তরপ্রদেশের বরেলীতে চলে যান। সেখানে ধীরেন্দ্র এবং দিলীপ নামে দুই ব্যক্তির সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় তাঁর। প্রথমে তাঁরা এলাকায় ছোটখাটো চুরি করতেন। পরে খুন এবং ডাকাতিতে হাত পাকান। পুলিশ জানিয়েছে, ২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত নেপালে গা ঢাকা দিয়েছিলেন অজয়। পরে পরিবার নিয়ে চলে আসেন দেহরাদূনে। ভারতে ফিরে এসে কখনও গাঁজা পাচার, আবার কখনও গয়নাার দোকান লুট— বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে যুক্ত ছিলেন অজয়। কয়েকটি মামলায় গ্রেফতারও হন। পরে জামিনে মুক্তি পান। অবশেষে ২০০১ সালের খুনের মামলায় অজয়কে গ্রেফতার করল পুলিশ।