২৮ বছরের নিকিকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি এবং ভাসুরের বিরুদ্ধে। চার জনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। —ফাইল চিত্র।
পণের জন্য খুন বধূ। উত্তরপ্রদেশের গ্রেটার নয়ডায় নিকি ভাটির হত্যাকাণ্ড নিয়ে শোরগোল সারা দেশে। ঠিক তখনই উত্তরপ্রদেশের একটি মহাপঞ্চায়েত থেকে মেয়ের বাবা-মায়েদের উদ্দেশে বার্তা, কন্যাদানের সময় সোনাদানা নয়, আগ্নেয়াস্ত্র দিন! ওই ভিডিয়ো এখন সমাজমাধ্যমে ভাইরাল (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)। তা দেখে নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। মঙ্গলবার থেকে তদন্ত শুরু করল তারা।
উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা-সহ কয়েকটি রাজ্য সামাজিক এবং নির্বাচনী সমস্যা সমাধানের জন্য কয়েকটি গ্রামকে নিয়ে আলোচনাসভা বসে। সেখানে জনমত তৈরি হয়। নিদান দেন মাতব্বরেরা। অনেকটা খাপ পঞ্চায়েতের মতো এই সভাগুলিকে বলা হয় মহাপঞ্চায়েত। সম্প্রতি বাগপতের গৌরীপুর মিতলী গ্রামে আয়োজিত একটি মহাপঞ্চায়েতে অংশ নিয়েছিলেন রাজপুত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা। সেখানকার বক্তারা ডাক দিয়েছেন, এ বার থেকে বিয়ের সময় কনেকে আর গয়নাগাটি দেওয়া হবে না। শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার সময় তাঁকে দেওয়া হোক তলোয়ার, ছোরা, পিস্তল ইত্যাদি। কারণ, শ্বশুরবাড়িতে নিজেকেই নিজেকে রক্ষা করতে হবে। পণের জন্য গার্হস্থ্য হিংসা হচ্ছে। সেখান থেকে নিজেদের বাঁচাতে আগ্নেয়াস্ত্র তুলে নিতে বলা হচ্ছে বধূকে।
সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে এমনই একটি ভিডিয়ো। সেখানে ‘সর্ব ভারতীয় ক্ষত্রিয় মহাসভা’র সভাপতি অজয়প্রতাপ সিংহ বলেন, ‘‘কন্যাদানের সময় সাধারণত আমরা মেয়েদের সোনাদানা দিই। সেগুলো ওদের কোনও কাজে লাগে না। দোকান-বাজারে গেলে টুকিটাকি গয়না পরে বেরোয় মেয়েরা। সেখানে আবার ছিনতাইয়ের ভয়। ও সবের দরকার নেই। এখন থেকে সোনাদানার বদলে মেয়েদের ছুরি, পিস্তল অথবা তলোয়ার দিন। সমস্ত রকম অপরাধ থেকে মুক্ত হতে সাহায্য করুন।’’ ওই নেতার ব্যাখ্যা, সামাজিক পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। এখন আত্মরক্ষার জন্য নিজেদের কাছে অস্ত্র রাখা জরুরি। মহাপঞ্চায়েতে অংশ নিয়েছিলেন ব্রিজেন্দ্র সিংহ নামে এক যুবক। তিনি বলেন, ‘‘বীরঙ্গনা ছিলেন রানি লক্ষ্মীবাঈ। কিন্তু এখন সে রকম করলে পুলিশ ধরবে।’’
এই সমস্ত ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। নজর এড়ায়নি পুলিশেরও। বাগপতের পুলিশ সুপার সুরজ রাই বলেন, ‘‘সমাজমাধ্যম থেকে বিষয়টি জানতে পেরেছি। ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। কয়েক জন পুলিশ আধিকারিককে দায়িত্ব দিয়েছি।’’ উল্লেখ্য, গত সোমবার ২৮ বছরের নিকিকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ ওঠে তাঁর স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি এবং ভাসুরের বিরুদ্ধে। চার জনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনার ভয়বহতা শিহরিত করেছে সকলকে।