বিদায়: ফিরে যাচ্ছে সোহেল। বিদায় জানাচ্ছে আবাসিকরা। —নিজস্ব চিত্র।
ভারত ঘুরে দেখার ইচ্ছে হয়েছিল বাংলাদেশের সোহেলের। সেই কারণে আরও দুই বন্ধুকে নিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করেছিল সে। বাকি দুই বন্ধু পালিয়ে গেলেও সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে যায় সোহেল।
প্রায় দুই বছর আগের এই ঘটনা। জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ থানার ভোলাপাড়া সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করছিল সোহেল ও তার বন্ধুরা। সেসময় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে যায় সোহেল। তখন বাংলাদেশে দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল সে। ধরা পড়ার পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। এরপর জলপাইগুড়ি জেলা দায়রা আদালতের নির্দেশে সোহেলের ঠিকানা হয় সরকারি কোরক হোম।
প্রায় দুই বছর সেখানে থাকার পরে অবশেষে ঘরে ফিরছে সোহেল। রবিবার সকালে জলপাইগুড়ি কোরক হোম থেকে চ্যাঙরাবান্ধা সীমান্ত দিয়ে সোহেলকে ফেরত পাঠানো হয় বাংলাদেশে। সরকারি আইন অনুযায়ী এ দিন সকালে সোহেলকে নিয়ে যাওয়া হয় চ্যাঙরাবান্ধা সীমান্তে। সেখান থেকে বাংলাদেশ পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে তাকে বাড়ির লোকের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কোরক হোম সূত্রে জানা গিয়েছে, সোহেলের বাড়ি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার জেলেল বস্তিতে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এ দিন সকালে হোম ছেড়ে যাওয়ার আগে সোহেল জড়িয়ে ধরে তার সঙ্গী আবাসিকদের। দীর্ঘ দিনের সঙ্গীকে বিদায় জানাতে চোখ ছলছল করে উঠেছিল আবাসিকদের অনেকেরই। তাদের অনেকেই সোহেলকে যোগাযোগ রাখার জন্য অনুরোধ করেছে। এ দিন সোহেল বলে, ‘‘দেশে ফিরে গিয়ে ফের স্কুলে ভর্তি হব। মাধ্যমিক পরীক্ষা দেব। এরপর নিয়ম মেনেই ভারতে বেড়াতে আসব। হোমের প্রতি আমার দুর্বলতা তৈরি হয়েছে। এই হোমের আবাসিকদের জন্য কিছু করার ইচ্ছে আছে।’’
সূত্রের খবর, এই হোমে বর্তমানে ৮ জন বাংলাদেশি আবাসিক রয়েছে। হোম সুপার দেবব্রত দেবনাথ বলেন, ‘‘আমরা বাংলাদেশের অন্য আবাসিকদেরও বাড়ি পাঠানোর জন্য উদ্যোগী হয়েছি।’’
সূত্রের খবর, দু’দেশের আইন মেনে এই আবাসিকদের বাড়ি পাঠানোর ক্ষেত্রে বেশ কিছু জটিল পদ্ধতি রয়েছে। এই জটিলতা কাটিয়ে উঠতে যথেষ্ট সময় লাগে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।