আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব (বাঁ দিকে)-সহ সদ্য যোগদানকারী নেতারা। ছবি: পিটিআই।
বিহারে বিধানসভা ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের জেডিইউ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চিরাগ পাসোয়ানের দল লোক জনশক্তি পার্টি-রামবিলাস (এলজেপি-আর)-এ ভাঙন ধরাল আরজেজি। লালুপ্রসাদের পুত্র তেজস্বী যাদবের হাত থেকে ‘লন্ঠন’ পতাকা হাতে নিলেন একঝাঁক নেতা।
জেডিইউ-এর প্রাক্তন সাংসদ সন্তোষ কুশওয়াহা, প্রাক্তন বিধায়ক রাহুল শর্মা, প্রাক্তন জেডিইউ সাংসদ গিরিধারী প্রসাদ যাদবের ছেলে চাণক্যপ্রসাদ রঞ্জন এবং এলজেপিআর নেতা অজয় কুশওয়াহা শুক্রবার তেজস্বীর উপস্থিতিতে যোগ দিয়েছেন আরজেডি-তে। এঁদের মধ্যে বাঁকার প্রাক্তন সাংসদ গিরিধারী বিহার রাজনীতিতে ‘প্রভাবশালী’ হিসেবেই পরিচিত। ক্ষমতাসীন এনডিএ-র উপর চাপ আরও বেড়েছে শনিবার। দ্বারভাঙ্গা জেলার আলিনগরের বিজেপি বিধায়ক মিশ্রীলাল যাদব ইস্তফা দিয়ে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন। সূত্রের খবর, তিনিও আরজেডি-তে যোগ দিতে চলেছেন। মিশ্রীলাল শনিবার বলেন, ‘‘এনডিএ-তে দলিত এবং অনগ্রসরেরা বঞ্চিত। তাঁরা প্রাপ্য সম্মান পান না।’’
২০২০ সালের বিধানসভা ভোটে এনডিএ-র তৎকালীন সহযোগী বিকাশশীল ইনসান পার্টি (ভিআইপি)-র টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন মিশ্রীলাল। পরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। এ বার জল্পনা রয়েছে, আলিনগর কেন্দ্রে জনপ্রিয় গায়িকা মৈথিলী ঠাকুরকে প্রার্থী করতে পারে বিজেপি। বিহারে আসন ভাগাভাগি নিয়ে এনডিএ-র অন্দরে জট এখনও পুরোপুরি কাটেনি। সূত্রের খবর, পদ্মশিবিরের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, ২৪৩টি আসনের মধ্যে জেডিইউ ১০২, বিজেপি ১০১, এলজেপিআর ২৫টি আসনে লড়বে। এ ছাড়া প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মাঁঝীর হিন্দুস্থানি আওয়াম মোর্চা (হাম)-কে ৮ এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উপেন্দ্র কুশওয়াহারা রাষ্ট্রীয় লোকতান্ত্রিক মোর্চা (আরএলএম)-কে ৭টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চিরাগ এবং জিতনরাম ‘বাড়তি’ আসনের দাবিতে অনড়। এই পরিস্থিতিতে শনিবার বিকেলে বিহার ভোটে বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের উপস্থিতিতে সহযোগী দলগুলির নেতারা বৈঠক করতে পারেন বলে এনডিএ সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশন গত ৬ অক্টোবর নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে জানিয়েছে, এ বার বিহারের ২৪৩টি বিধানসভা আসনে দু’দফায় ভোট হবে। প্রথম দফার নির্বাচন হবে ৬ নভেম্বর। ওই দফায় ১২১টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। ১০-১৭ অক্টোবর পর্যন্ত মনোনয়ন জমার পর তা পরীক্ষা হবে ১৮ অক্টোবর। প্রথম দফার ভোটের প্রার্থীরা নাম প্রত্যাহার করতে পারবেন ২০ অক্টোবর পর্যন্ত। ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় মোট ১২২টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। ওই দফার গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে ১৩ অক্টোবর। ২০ অক্টোবর পর্যন্ত মনোনয়ন জমা করা যাবে। ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত প্রার্থীরা চাইলে নাম তুলে নিতে পারবেন। ভোটগণনা হবে ১৪ নভেম্বর। এ বারের ভোটেও মূল লড়াই এনডিএ বনাম আরজেডি-কংগ্রেস-বামেদের মহাগঠবন্ধনের মধ্যে।