পঠানকোট আর গুরুদাসপুরের ধাঁচে ভারতে ফের বড় ধরনের হামলার ফন্দি এঁটেছে জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গিরা।
ছক কষেছে রাজধানী দিল্লি সহ উত্তর ভারতের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে বড় রকমের বিস্ফোরণ ঘটানোর। অনেকটা প্যারিস হামলার ধাঁচে ওই হানাদারির জন্য তারা বহু দিন ধরেই জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। তৈরি করছে তাদের ‘সুইসাইড স্কোয়াড’কেও।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ওই হামলা চালানোর জন্য জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদকে পরোক্ষে বা সরাসরি অর্থ, অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সাহায্য করছে পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) ও আরেকটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন। এ মাসের গোড়ার দিকে সেনাবাহিনীর তরফে পঞ্জাব সরকারকে এ ব্যাপারে একটি ‘কনফিডেন্সিয়াল রিপোর্ট’ দেওয়া হয়েছে। তাতে ওই সম্ভাব্য হামলায় আইএসআইয়ের মদত দেওয়ার ব্যাপারে রীতিমতো তথ্যপ্রমাণ দেওয়া হয়েছে।
সেনাবাহিনীর দেওয়া ওই গোপন রিপোর্টে যথাযথ তথ্যপ্রমাণ দিয়ে বলা হয়েছে, ওই হামলার পুঙ্খানুপুঙ্খ পরিকল্পনা, এলাকা বাছাইয়ের জন্য জইশ-ই-মহম্মদের কম্যান্ডার আওয়াইজ মহম্মদকে মালয়েশিয়ায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখানে আওয়াইজকে দেওয়া হবে ভুয়ো মালয়েশিয়ার নাগরিকের পাসপোর্ট। সেই ভুয়ো পাসপোর্ট দেখিয়েই ভারতে ঢুকবে জইশ কম্যান্ডার আওয়াইজ, ‘অপারেশন’ চালাতে। আওয়াইজ আদতে পাক নাগরিক। তাঁর বাড়ি পাকিস্তানের ওকারায়। সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা সূত্রের খবর, আওয়াইজকেই মূলত উত্তর ভারতের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে হামলার নেতৃত্ব দিতে বলা হয়েছে। এমনকী, ওই হামলা চালানোর জন্য তাঁকে ভারতে তাঁরই পছন্দের লোকজন নিয়োগ করতে বলা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর তরফে পঞ্জাব সরকারকে ওই গোপন রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে গত ১৮ মে। মজার ঘটনা হল, পঠানকোটের বায়ুসেনা ঘাঁটিতে হামলার ঘটনার তদন্তের জন্য ভারত ও পাকিস্তানের যৌথ তদন্তকারী দল ঘটনাস্থল ঘুরে গিয়েছিল মাসদু’য়েক আগেই। আর কার্যত, তার পর পরই পঞ্জাব সরকারকে সেনাবাহিনীর তরফে ওই সম্ভাব্য হামলা আর তার প্রস্তুতি-তোড়জোড়ের কথা জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন- নতুন প্রধান বেছে নিল তালিবানরা, আফগানিস্তানে আরও বড় হামলার ডাক
সেই গোপন রিপোর্টে জানানো হয়েছে, প্যারিস হামলার ধাঁচে ভারতে ওই হামলার জন্য পাকিস্তানের পঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখোয়ায় তিনটি অফিস খুলেছে জইশ-ই-মহম্মদ। শুধু তাই নয়, কোহাট ও হাজারা এলাকায় তাদের বন্ধ হয়ে যাওয়া কয়েকটি অফিস নতুন করে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। ঢেলে সাজা হচ্ছে ওই জঙ্গি সংগঠনের নেটওয়ার্ক। ওই হামলা যাঁরা চালাবেন, সেই জঙ্গিদের গত ছ’মাস ধরে জোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বালাকোট এলাকার বেশ কয়েকটি গোপন আস্তানায়। সেই ক্যাম্পগুলো পাক-পঞ্জাবের বাহোয়ালপুর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, ওই বাহোয়ালপুর থেকেই দিল্লি সহ উত্তর ভারতের বেশ কয়েকটি এলাকায় গত এক মাসে অন্তত আট হাজার টেলিফোন এসেছে ভুয়ো নম্বর থেকে।