অসময়ের ঝড়বৃষ্টিতে বিপুল পরিমাণ শস্য নষ্ট হয়েছে। তার জেরে একের পর এক চাষির মৃত্যুর খবর উঠে আসছে। পরিস্থিতি বিচার করে এ বার উত্তরপ্রদেশে ‘প্রাকৃতিক বিপর্যয়’ ঘোষণা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে চিঠি লিখে হাজার কোটি টাকা ত্রাণেরও দরবার করলেন তিনি।
উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন সূত্রে খবর, অসময়ের ঝড়বৃষ্টির জেরে প্রায় ৫৫টি জেলায় চাষাবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ ডালজাতীয় শস্য ও গম খেতেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যে সব কৃষকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের পরিবারদের মুখ্যমন্ত্রীর তহবিল থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা গত কালই ঘোষণা করেছিলেন অখিলেশ। পাশাপাশি, ত্রাণকার্যের সঙ্গে যুক্ত সরকারি আধিকারিকদের সমস্ত ছুটি বাতিল করা হয়।
কিন্তু তার পরেও কৃষকদের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঠেকানো যাচ্ছে না। পুলিশ জানিয়েছে, গত সন্ধেয় উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের হালিয়া গ্রামে বছর পঞ্চাশের এক কৃষক গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তাঁর নাম রাজু। পুলিশের ধারণা, অসময়ের বৃষ্টির জেরে রাজুর খেতের শস্য নষ্ট হওয়াতেই আত্মঘাতী হন তিনি। আরও জানা গিয়েছে, গত কাল খেতের হাল দেখে বাড়ি ফেরার পরই বিষণ্ণ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। সন্ধের দিকে বাড়ি থেকেই তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তবে রাজুই প্রথম নন। ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের রাজ্য সভাপতি হরপাল সিংহের দাবি, গত আটচল্লিশ ঘণ্টায় তাপ্পাল এবং আক্রাবাদেও দুই কৃষকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর মিলেছে। প্রাথমিক ভাবে তাঁদের ক্ষেত্রেও আত্মহত্যার কথাই বলছে পুলিশ। তা ছাড়াও বরাবাঁকি জেলায়, বছর পঞ্চাশের আর এক কৃষকের হঠাৎ মৃত্যুর খবর মিলেছে। এক কৃষকের বয়ানে, ‘‘বিক্রি করার জন্য যতটুকু শস্য ছিল, তা নষ্ট হয়েছে। নিজেদের জন্য যতটুকু দরকার, সেটুকুও এ বার নষ্ট হতে বসেছে।’’