ফাইল চিত্র।
‘বুয়া’র সঙ্গে সুর মেলালেন ‘ভাতিজা’ও। তেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বিজেপির পাশাপাশি কংগ্রেসের সমালোচনা করলেন তিনিও।
সম্প্রতি পেট্রল এবং ডিজেলের দাম বাড়া নিয়ে বিএসপি নেত্রী মায়াবতী দাবি করেছিলেন যে মোদী এবং মনমোহন, দুই সরকারেরই ভ্রান্ত নীতি এর জন্য দায়ী। বৃহস্পতিবার এসপি নেতা তথা উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ সিংহ যাদব কার্যত সেই কথারই প্রতিধ্বনি করে বললেন, ‘‘তেলের দাম বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রে সব সরকারই একই ভাবে দায়ী। কংগ্রেস তাদের শাসনকালে পেট্রল এবং ডিজেলের দাম বাড়িয়েছিল। সেই কারণেই ২০১৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার সুযোগ পায়। এখন তারা বলছে, এই দাম নিয়ন্ত্রণ করার নাকি কোনও উপায়ই নেই। ফলে মানুষের সামনে একটাই রাস্তা। ২০১৯-এর জন্য অপেক্ষা করা এবং মোদী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা।’’
উত্তরপ্রদেশে অখিলেশ যেন তেন প্রকারেণ মায়াবতীকে নিজের জোটে রাখতে চাইছেন। প্রয়োজনে আসনেও সমঝোতা করতে তিনি রাজি, তা-ও ঘোষণা করেছেন মুলায়মপুত্র ‘টিপু’। বিজেপি যতই সক্রিয়তা বাড়াচ্ছে মায়াবতীকে জোট থেকে সরিয়ে দেওয়ার, ততটাই তৎপর হচ্ছেন অখিলেশ সেটি রুখতে। এ নিয়ে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর সঙ্গেও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে অখিলেশের। তিনি দিল্লি এসে রাহুলের সঙ্গে বৈঠকও করে গিয়েছেন।
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, মায়াবতীর সঙ্গে সুর মিলিয়ে আসলে এক ঢিলে দু’পাখি মারতে চাইছেন অখিলেশ। প্রথমত, মায়াবতীকে যথাসাধ্য খুশি রাখা। যাতে কোনও ছিদ্র দিয়ে তিনি গলে না যেতে পারেন! অন্য দিকে প্রতীকী কংগ্রেস-বিরোধিতা করে উত্তরপ্রদেশে নিজের পৃথক রাজনৈতিক সত্তাও বাঁচিয়ে রাখা। পুরোটাই হচ্ছে রাহুল-অখিলেশের তৈরি করা চিত্রনাট্য অনুসারে— এমনটাই মনে করছে উত্তরপ্রদেশের রাজনৈতিক শিবির।
অখিলেশের কংগ্রেস সমালোচনার সঙ্গে উনিশের ভোটে উত্তরপ্রদেশে জোট গড়ার কোনও নেতিবাচক সম্পর্ক নেই— এই দাবি দলীয় সূত্রেরও। সাম্প্রতিক উপনির্বাচনগুলির পর এসপি-বিএসপি-কংগ্রেস এবং আরএলডি-র মহাজোট যে কতটা কার্যকরী হতে পারে, ভোটের ময়দানে তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। ফলে রাহুল-অখিলেশের মতো বিজেপিও বুঝছে, এই জোট না ভাঙতে পারলে উনিশে ভরাডুবি হবে উত্তরপ্রদেশে। আর স্বাভাবিক ভাবেই তার প্রভাব পড়বে দিল্লির রাজনীতিতে। তাই মায়াবতীর দলিত ভোটকে কব্জা করার জন্য দু’দিক থেকেই শুরু হয়েছে কৌশলের লড়াই।