অখিলেশ যাদব।— ফাইল চিত্র।
প্রশাসনে অবহেলা, মন পড়ে আছে হিন্দুত্বে। বিজেপি মন্ত্রীদের এই মর্মে আক্রমণ করে এসপি নেতা অখিলেশ সিংহ যাদবের বক্তব্য— তাঁরা দু’জায়গায় শপথ নেন, কিন্তু আনুগত্য থাকে একটির উপরেই। তাঁর কথায়, ‘‘উত্তরপ্রদেশে বাঁদরের আতঙ্ক হলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন হনুমান চালিশা পড়ুন! পুণ্য অর্জনের জন্য কী ভাবে সঙ্গমে ডুব দিতে হবে, রাজ্যবাসীকে তা-ও শেখান তিনি। কিন্তু প্রশাসনিক বিষয়ে কোনও ধারণাই নেই।’’
একটি সংবাদ পোর্টালকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিরোধী ঐক্যকেও তুলে ধরে অখিলেশ বলেন, ‘‘বিরোধী জোট শুধু নির্বাচন জয়ের সূত্র নয়, বিচারধারার সঙ্গম। মানুষ ঠিক করে ফেলেছেন, তাঁদেরই ভোট দেবেন।’’ জানান, এ বার থেকে সাইকেল (এসপি-র প্রতীক) এবং হাতি (বিএসপি-র প্রতীক) এক সঙ্গে চলবে।
গত কালই বিরোধী নেতৃত্বকে নিয়ে ব্যঙ্গ করে অমিত শাহ বলেন, ‘‘জানতে চান মোদীজির বিরুদ্ধে কে ওদের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী? সোমবার মায়াবতী, মঙ্গলবার অখিলেশ, দেবগৌড়া বুধবার, বৃহস্পতিবার চন্দ্রবাবু, শুক্রবার স্ট্যালিন, শনিবার পওয়ার এবং রবিবার গোটা দেশ ছুটিতে যাবে! এই ধরনের নেতৃত্ব দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে না।’’
অখিলেশের পাল্টা বক্তব্য, বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা সরকারি কাজে শপথ নিলেও তাঁরা সঙ্ঘের ভাবাদর্শেই ডুবে থাকেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘সব বড় বড় পদে আজ আরএসএস-এর লোক। সংবিধান লঙ্ঘন নিয়ে তাঁরা চুপ।’’
কংগ্রেসের উদ্দেশেও ইতিবাচক বার্তা দিয়েছেন প্রাক্তন এই মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের বিরোধী মহাজোটে কেন কংগ্রেসকে সামিল করা হল না— এই প্রশ্নের উত্তরে অখিলেশের জবাব, ‘‘কংগ্রেস তো জোটে রয়েছে। ব্রিগেডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা জনসভায় ছিল। উত্তরপ্রদেশেও আমরা কংগ্রেসের জন্য দু’টি আসন ছেড়ে রেখেছি। ৮০টি আসন রয়েছে। আরও বেশি আসন থাকলে আরও কিছু দেওয়া যেত।’’ প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর অভিষেককে আগেই স্বাগত জানিয়েছিলেন। এ দিন ফের অখিলেশ বলেন, ‘‘আমি তাঁকে স্বাগত জানাচ্ছি। নতুনেরা যোগ দিলে দেশের রাজনীতি বদলাবে।’’
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংরক্ষণের বিতর্ক নিয়ে সরব হয়েছেন এসপি-র এই শীর্ষ নেতা। বলেছেন, ‘‘উপাচার্য, রাজ্যপাল সব আরএসএস-এর লোক। এত নৈরাজ্য চলছে কিন্তু উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল চোখ বুজে রয়েছেন।’’ সম্প্রতি বিরোধী জোটকে ‘মহাভেজাল’ হিসাবে কটাক্ষ করেছেন নরেন্দ্র মোদী। অখিলেশের জবাব, ‘‘বিজেপি বরাবর কিন্তু শরিকদের নিয়েই সরকারে এসেছে।’’
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে অপব্যবহারের অভিযোগেও সুর চড়িয়েছেন অখিলেশও। বলেন, ‘‘যে ভাবে বিরোধীদের জেলে ঢোকানো চলছে, আমার ধারণা বিজেপি পাকিস্তানের কাছ থেকে শিখছে! সে দেশে ভোটে হেরে যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন।’’