দলিত সঙ্কটে আসরে অমিত

লোকসভা ভোটের ঠিক আগে এমনিতেই নানা ঘটনায় স্বস্তিতে নেই নরেন্দ্র মোদী সরকার। তার মধ্যে দলিত প্রশ্নে যে ভাবে দেশের নানা প্রান্তে বিজেপি-বিরোধিতার সুর চড়ছে, তাতে অশনি সঙ্কেত দেখছেন দলের বহু শীর্ষ নেতা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:৪৫
Share:

অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র।

দলিত-বিক্ষোভের আগুন নেভেনি আজও। অন্তত ১০টি রাজ্যের পরিস্থিতি এখনও থমথমে। বিশেষ করে বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলোয় ইতস্তত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেই চলেছে। আজ রাজস্থানে এক প্রাক্তন এবং এক বর্তমান বিধায়কের বাড়িয়ে আগুন লাগায় বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের একাংশের দাবি, এই বিক্ষোভকারীরা উচ্চবর্ণের এবং যাঁদের বাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে, তাঁরা দলিত সম্প্রদায়ের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ কয়েকটি জায়গায় কার্ফু জারি করা হয়েছে। তার মধ্যেই গত কালের সংঘর্ষে আহত আরও দু’জনের মৃত্যু হয়েছে মধ্যপ্রদেশে। সব মিলিয়ে দলিত-বিক্ষোভে গোটা দেশে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১।

Advertisement

লোকসভা ভোটের ঠিক আগে এমনিতেই নানা ঘটনায় স্বস্তিতে নেই নরেন্দ্র মোদী সরকার। তার মধ্যে দলিত প্রশ্নে যে ভাবে দেশের নানা প্রান্তে বিজেপি-বিরোধিতার সুর চড়ছে, তাতে অশনি সঙ্কেত দেখছেন দলের বহু শীর্ষ নেতা। এই পরিস্থিতিতে আজ আসরে নামলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। এবং নেমেই তাঁর স্লোগান, ‘‘জয় ভীম!’’ যে স্লোগান দিয়ে বছর দুয়েক আগে মোদী-অমিত শাহের রাজ্য গুজরাতে বিজেপির ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন দলিত নেতা জিগ্নেশ মেবাণী। সেই স্লোগানে দলিত মন জেতার পাশাপাশি মোদীকে আসরে নামিয়ে কী ভাবে ক্ষত মেরামত করা যায়, সেই অঙ্ক কষতেই এখন হিমশিম খাচ্ছে গেরুয়া শিবির।

সংরক্ষণ তোলার হাওয়া, একের পর এক দলিত নিগ্রহ, সুপ্রিম কোর্টে আইন লঘু, ফের আদালতে যেতেও গড়িমসি— এর মধ্যেই কাল দলিতদের ডাকা ভারত বন্‌ধ এবং বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলোয় অন্তত ১১ জনের মৃত্যু ঘুম কেড়ে নিয়েছে মোদী-শাহের। সব মন্ত্রীদের মাঠে নামানোর পাশাপাশি অমিত নিজেও মাঠে নামতে বাধ্য হয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, বিরোধীরা দলিতদের ভোটব্যাঙ্ক মনে করে। কিন্তু দলিতদের উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ মোদী।

Advertisement

আরও পড়ুন:
চুপ কেন মোদী, প্রশ্ন রাহুলের

দলিত-আইনে গ্রেফতারি এড়ানোর শর্তে আপত্তি কেন্দ্রের​

বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, উত্তরপ্রদেশের সাম্প্রতিক উপনির্বাচনেই স্পষ্ট, দলিতরা দূরে সরছেন। বিজেপির দলিত সাংসদরাও প্রকাশ্যেই মুখ খুলছেন দলের বিরুদ্ধে। তাতে চিন্তা বাড়ছে সঙ্ঘেরও। কারণ, হিন্দুদের পাশাপাশি দলিতদেরও এক ছাতায় আনতে উদ্যোগী হয়েছিলেন খোদ সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত। হিন্দুদের মধ্যে বিভাজনে আখেরে ক্ষতি বিজেপিরই।

বিজেপি নেতৃত্বের কাছে এখন বড় চ্যালেঞ্জ, মোদীর প্রতি দলিতদের আস্থা ফেরানো। ১৪ এপ্রিল, অম্বেডকরের জন্মদিন থেকে শুরু করে এক মাসের বেশি কর্মসূচি মোদী আগেই ঘোষণা করেছেন। প্রথমে স্থির ছিল, মোদী সে দিন অম্বেডকরের জন্মস্থল মহুতে যাবেন। কিন্তু এখন ভাবা হচ্ছে, মোদী সে দিন সকালে সংসদে অম্বেডকরের ছবিতে মালা দিয়ে ছত্তীসগঢ়ের এক প্রত্যন্ত এলাকায় যাবেন। নকশাল প্রভাবিত ওই এলাকাটি দলিত-আদিবাসী অধ্যুষিত। সে দিনই বাজেটে ঘোষিত ‘মোদী কেয়ার’ও চালু করা হবে। আগে ভাবনা ছিল এই প্রকল্পটি ২ অক্টোবর, গাঁধী-জয়ন্তীতে চালু করা হবে। জনধন প্রকল্পের ধাঁচে ‘বনধন’ প্রকল্পও শুরু করতে চান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন