বেসুরো নেতারা, কংগ্রেস টলমল

সংসদে দল সরকারি পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছে। অথচ প্রকাশ্যেই সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, মিলিন্দ দেওরা, জনার্দন দ্বিবেদী, অনিল শাস্ত্রী, দীপেন্দ্র হুডার মতো নেতারা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৯ ০৩:৪২
Share:

প্রতীকী ছবি।

সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ এবং জম্মু-কাশ্মীর বিভাজনের প্রশ্নে দু’ভাগ কংগ্রেস।

Advertisement

সংসদে দল সরকারি পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছে। অথচ প্রকাশ্যেই সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, মিলিন্দ দেওরা, জনার্দন দ্বিবেদী, অনিল শাস্ত্রী, দীপেন্দ্র হুডার মতো নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, ৩৭০ বিলোপের জন্য ‘ঠিক পদক্ষেপ’ করেছেন নরেন্দ্র মোদী। গাঁধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ নেতা দ্বিবেদীর মতে, দেরিতে হলেও ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ করে একটি ঐতিহাসিক ভুল সংশোধন করা সম্ভব হয়েছে। সিন্ধিয়ার টুইট, ‘‘জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ নিয়ে কেন্দ্রের পদক্ষেপকে সমর্থন করি। এটা দেশের স্বার্থে করা হয়েছে।’’ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রীর পুত্র অনিল শাস্ত্রীর টুইট, ‘‘কংগ্রেসের উচিত ছিল মানুষের মনোভাব বোঝা। দেশের মানুষ সরকারের সঙ্গে রয়েছে।’’ মুম্বই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মিলিন্দ দেওরার মতে, কাশ্মীরি পণ্ডিত ও যুবকদের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলির নতুন করে ভাবা উচিত। তাঁর মন্তব্য, ‘‘৩৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে রক্ষণশীল ও উদারপন্থীদের বিতর্ক দুর্ভাগ্যজনক।’’

এর মধ্যেই লোকসভায় কাশ্মীর নিয়ে অধীর চৌধুরীর মন্তব্য ঘিরে ব্যাপক হইচই শুরু হয়েছে। আজ জম্মু-কাশ্মীর সংক্রান্ত বিলগুলি পেশ করা নিয়ে প্রশ্ন তুলে লোকসভায় দলের নেতা অধীর বলেন, ‘‘আপনারা বলছেন, এটা অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু ১৯৪৮ সাল থেকে রাষ্ট্রপুঞ্জ কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে নজরদারি চালাচ্ছে। রয়েছে শিমলা চুক্তি ও লাহৌর ঘোষণাপত্র। এটা দ্বিপাক্ষিক কিংবা আন্তর্জাতিক বিষয় যা-ই হোক...।’’ এই কথায় ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে প্রবল বিরোধিতা শুরু হয়ে যায়। পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি বলেন, ‘‘মুণ্ডহীন কংগ্রেসের মস্তিষ্কও চলে গিয়েছে।’’ তাঁর দাবি, অধীর বিতর্কিত মন্তব্য করলেও সেই সময় লোকসভায় হাজির রাহুল ও সনিয়া গাঁধী কোনও প্রতিবাদ করেননি।

Advertisement

দিনভর এমন ডামাডোলের পরে রাতে বৈঠকে বসে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি। সেখানে ডাকা হয় অধীরকে। ছিলেন সিন্ধিয়াও। তিন ঘণ্টা আলোচনার পরে বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘কেন্দ্র যে-রকম একতরফা ভাবে এবং অগণতান্ত্রিক উপায়ে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ ও রাজ্য বিভাজন করেছে, কংগ্রেস তার নিন্দা করছে। এটা সাংবিধানিক আইন, রাজ্যের এক্তিয়ার, সংসদীয় রীতি এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উল্লঙ্ঘন। সব শ্রেণির মানুষের সঙ্গে‌ কথা বলে, সাংবিধানিক রীতি মেনে সংবিধান সংশোধনের আগে পর্যন্ত ৩৭০ অনুচ্ছেদকে শ্রদ্ধা করা উচিত ছিল। এই ঘটনা শুধু কাশ্মীরে সীমাবদ্ধ থাকবে না। অন্য রাজ্যেও এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে।’

যদিও প্রশ্ন, ৩৭০ পর্ব কার্যত মিটে যাওয়ার পরে বৈঠক করার অর্থ কী? আর দলে যে-নেতৃত্বহীনতা চলছে, তা ঢাকা পড়বে কিসে?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন