Jammu And Kashmir

মিথ্যা বলছে সরকার, কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে বিস্ফোরক মেহবুবা-কন্যা

মেহবুবা বন্দি হওয়ার পর থেকে মায়ের টুইটার হ্যান্ডল সামলাচ্ছেন ইলতিজা। শুক্রবার সেই টুইটারেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনেন তিনি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শ্রীনগর শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৯ ২০:১৮
Share:

শ্রীনগরে এখনও বিপুল সংখ্যক সেনা মোতায়েন রয়েছে। ছবি: পিটিআই।

জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে মিথ্যা বলছে মোদী সরকার। এ বার এমনই দাবি করলেন উপত্যকার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির কন্যা ইলতিজা। তাঁর অভিযোগ, মানুষকে মিথ্যা বোঝাচ্ছে বিজেপি সরকার। গোটা উপত্যকায় এখনও একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ এবং সেখানকার বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর তিন মাস কাটতে চললে, এখনও বহু মানুষকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। এমনটাই অভিযোগ করেছেন তিনি।

Advertisement

মেহবুবা বন্দি হওয়ার পর থেকে মায়ের টুইটার হ্যান্ডল সামলাচ্ছেন ইলতিজা। শুক্রবার সেই টুইটারেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনেন তিনি। টুইটারে ইলতিজা লেখেন, ‘আজ কাশ্মীর থেকে ফিরলাম। জঙ্গিহানার ভয়ে নয়, স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই অসহযোগিতায় নেমেছেন সাধারণ মানুষ। মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাদ দিলে, সারা দিনই দোকানপাট বন্ধ থাকছে। রাস্তায় গাড়ির দেখা নেই বললেই চলে। একেবারে দমবন্ধকর পরিস্থিতি।’

উপত্যকার অধিকাংশ জায়গা থেকে কার্ফু তুলে নেওয়া হয়েছে এবং সেখানকার পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক বলেই গত কয়েক দিন ধরে দাবি করে আসছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু এ দিন সেই দাবিও নস্যাৎ করে দেন মেহবুবা-কন্যা। তিনি লেখেন, ‘যে ১৪৪ ধারার আওতায় ৪ জনের বেশি জমায়েত নিষিদ্ধ, এখনও তা জারি রয়েছে উপত্যকায়। প্রতি ১০০ গজে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। রাস্তায় বেরোলেই রাইফেল ও আগ্নেয়াস্ত্র হাতে ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে সেনাকে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলতে যা বোঝায়, বর্তমানে কাশ্মীর তার চেয়ে অনেক দূরে।’

Advertisement

ইলতিজার টুইট।

আরও পড়ুন: গোপাল কান্ডার সমর্থন প্রশ্নে দু’ভাগ বিজেপি, তীব্র ভর্ৎসনা বিরোধীদেরও​

গত কয়েক দিনে কাশ্মীরের একাধিক ছবি সামনে এসেছে। তাতে রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক থাকতে দেখা গিয়েছে। রাস্তাঘাটে মানুষের দেখাও মিলেছে। কিন্তু এ সবই লোক দেখানো বলে দাবি করেছেন ইলতিজা। তাঁর কথায়, ‘শুনছি দিল্লি থেকে নাকি টাকা আসছে। কিছু হকারকে টাকা খাইয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু দিন কয়েক আগেই শোপিয়ানে প্রতিবাদে নেমেছিলেন এক দল মহিলা। তাঁদের স্বামী এবং আত্মীয়দের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে কাশ্মীরিদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অধিকার। ভারত সরকারের দাবি, বন্দি সকলকে নাকি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু খালিদা শাহ সাহিবা এবং তাঁর ছেলে মুজফ্‌ফর শাহকে বন্দি করেই রাখা হয়েছে। ৩৭০ ধারা বাতিল নিয়ে মানুষের মনে ক্ষোভ জমে আছে। তাঁদের দমন করতে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। চাপানো হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। কাশ্মীরিদের সঙ্গে কথা বলা উচিত কেন্দ্রীয় সরকারের, নাকি তাঁদের কোণঠাসা করে দেওয়া।স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলিকেও হুমকি দেওয়া হয়েছে, যাতে এই পরিস্থিতির খবর বাইরে না বেরোয়। অন্যথায় তাঁদেরও জেলে পোরার হুমকি দেওয়া হয়েছে।’

আগামী ৩১ অক্টোবর থেকে জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ, দু’টি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে গন্য হবে। তার আগে ২৭ অক্টোবর থেকে ফের পোস্টপেইড মোবাইল পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে বলেও অভিযোগ তোলেন ইলতিজা। তাঁর কথায়, ‘নিষেধাজ্ঞা তোলা নিয়ে মিথ্যা বলছে সরকার। আশ্চর্য লাগে, রাস্তাঘাটে গাড়ি দেখা যাওয়াই আজকাল স্বাভাবিক পরিস্থিতির মাপকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

ইলতিজার টুইট।

আরও পড়ুন: বিজেপি-কংগ্রেস কেউ অচ্ছুত নয়, ‘চাবি’ তাঁর হাতেই, জল্পনা জিইয়ে রেখে দাবি দুষ্মন্তের​

ইতিজার অভিযোগ নিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক এবং স্থানীয় প্রশাসনের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে ৫ অগস্ট উপত্যকার বিশেষ মর্যাদা বিলোপের পর থেকে এখনও কার্যত অবরুদ্ধই হয়ে রয়েছে জম্মু-কাশ্মীর। রাজ্যের প্রাক্তন দুই মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি এবং ওমর আবদুল্লাকে এখনও পর্যন্ত বন্দি করেই রাখা হয়েছে। গত শুক্রবার মেহবুবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পিডিপি নেতৃত্ব। সরকারি গেস্ট হাউসে মাত্র ২০ মিনিটের জন্য মেহবুবার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন তাঁরা। অন্য দিকে, দিন কয়েক আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ওমর আবদুল্লার একটি ছবি সামনে এসেছিল। তাতে একমুখ দাড়ি নিয়ে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তবে ছবিটি এখনকার কি না তা নিশ্চিত করেনি কেউই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন