অরবিন্দ কেজরীওয়াল। ছবি: পিটিআই।
দিল্লির বিধানসভা ভোটে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ ভেঙেছিল আগেই। এ বার ‘ইন্ডিয়া’র এক শরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলল আর এক শরিক। আর সেই অভিযোগের সূত্রেই তদন্তের নির্দেশ দিলেন দিল্লির উপরাজ্যপাল ভিকে সাক্সেনা। অভিযোগের তির দিল্লির আম আদমি পার্টি (আপ)-র সরকারের দিকে। এই ঘটনায় ‘ইন্ডিয়া’র অন্যতম শরিক দল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পাল্টা বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানোর অভিযোগ তুলেছেন আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল।
দিল্লির আপ সরকার সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-এর মতো ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সব মহিলাকে মাসে এক হাজার টাকা অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেজরীওয়ালের দল প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, ফের দিল্লিতে ক্ষমতায় ফিরলে তারা অনুদানের এই অঙ্ক বাড়িয়ে ২১০০ করবে। কংগ্রেস নেতা তথা দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের পুত্র সন্দীপ দীক্ষিত সম্প্রতি অভিযোগ করেন যে, এই প্রকল্পের জন্য অবৈধ ভাবে উপভোক্তাদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করছে আপ। কংগ্রেস নেতার আরও অভিযোগ, এই কাজের জন্য আপ শাসিত আর এক রাজ্য পঞ্জাব থেকে গোয়েন্দা আধিকারিকদের দিল্লি নিয়ে আসা হয়েছে। নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য নাকি পঞ্জাব থেকে দিল্লিতে নগদ অর্থও আনা হচ্ছে।
এই অভিযোগ ওঠার পরেই শনিবার দিল্লির উপরাজ্যপাল দিল্লির আপ সরকারের সামাজিক প্রকল্পগুলি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত শুরুর জন্য তিনি প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন দিল্লির মুখ্যসচিব এবং পুলিশ কমিশনারকে। প্রসঙ্গত, সন্দীপ কট্টর আপ-বিরোধী নেতা হিসাবেই কংগ্রেসে পরিচিত। শীলার পুরনো আসন ফের দলের অনুকূলে নিয়ে আসতে নয়াদিল্লি কেন্দ্রে কেজরীওয়ালের বিরুদ্ধে ভোটে লড়তে চলেছেন তিনি।
উপরাজ্যপাল তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পরেই বিজেপি এবং কংগ্রেসকে একই বন্ধনীতে রেখে আক্রমণ শানান কেজরীওয়াল। তিনি বলেন, “সরাসরি লড়াই করার সাহস বিজেপির নেই। তাই তারা সন্দীপ দীক্ষিতের অভিযোগকে সামনে রাখছে। কংগ্রেস-বিজেপি একসঙ্গে আপকে আটকানোর চেষ্টা করছে।” কিছু দিন আগেই বিরোধী জোট থেকে কংগ্রেসকে বহিষ্কার করার দাবি তুলেছে আপ। দিল্লির কংগ্রেস নেতা তথা এআইসিসির কোষাধ্যক্ষ অজয় মাকেন বুধবার কেজরীওয়ালকে ‘ফর্জিওয়াল’ (জালিয়াত) বলেছিলেন। দলের তরফে ‘শ্বেতপত্র’ প্রকাশ করে গত এক দশকে আপের শাসনে দিল্লি দুর্নীতি এবং অনুন্নয়নের শিকার হয়েছে বলেও দাবি করেছিলেন তিনি। তার পরেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সুর চড়ায় কেজরীর দল।
জানুয়ারির শেষ কিংবা ফেব্রুয়ারির গোড়ায় দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। লোকসভা ভোটে দিল্লিতে আপ-কংগ্রেস জোট বেঁধে লড়লেও বিধানসভা ভোটে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করছে দুই দল।