অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। — ফাইল চিত্র।
রীতিমতো আইন করে বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করার পথে হাঁটছে অসম সরকার! মঙ্গলবার বিধানসভায় এ সংক্রান্ত একটি বিল পেশ করেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। বিলে বহুগামিতাকে ‘অপরাধ’ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, বলা হয়েছে, প্রথম বার ধরা পড়লে হতে পারে সাত বছরের জেল।
মঙ্গলবার বিধানসভায় ‘অসম বহুবিবাহ নিষিদ্ধকরণ বিল, ২০২৫’ পেশ করেন হিমন্ত। স্পিকার বিশ্বজিৎ দাইমারির অনুমতিক্রমে বিলটি পেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। শিল্পী জ়ুবিন গার্গের মৃত্যু নিয়ে আলোচনার সময়ে বিরোধী কংগ্রেস, সিপিএম এবং রাইজোর দলের বিধায়কেরা ওয়াক আউট করলে তাঁদের অনুপস্থিতিতেই বিলটি পেশ করা হয়। প্রস্তাবিত বিলটি ষষ্ঠ তফসিলভুক্ত এলাকা ব্যতীত সারা রাজ্যেই প্রযোজ্য হবে। তবে সংবিধানের ৩৪২ অনুচ্ছেদে সংজ্ঞায়িত তফসিলি জাতি ও জনজাতির সদস্যদের এই বিলের আওতায় আনা হবে না।
বেশ কিছু দিন ধরেই আইনি সম্পর্কে বহুগামিতা নিষিদ্ধকরণের কথা ভাবছে অসম সরকার। সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘যে সব ব্যক্তির স্ত্রী/স্বামী জীবিত রয়েছেন এবং আইনি প্রক্রিয়ায় বিবাহবিচ্ছেদ হয়নি, তাঁরা পুনরায় বিবাহ করতে পারবেন না।” আরও জানানো হয়েছে, এই বিল আনার উদ্দেশ্য হল রাজ্যে বহুবিবাহের মতো প্রথা সম্পূর্ণ বন্ধ ও নির্মূল করা। এই বিলে বহুবিবাহকে একটি ফৌজদারি অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। নতুন আইনে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। কেউ যদি পূর্বের বিবাহ গোপন করে নতুন বিয়ে করেন, তা হলে তাঁর সর্বোচ্চ ১০ বছর জেল হতে পারে। সঙ্গে হতে পারে মোটা অঙ্কের জরিমানাও। শুধু তা-ই নয়, গোটা বিবাহপ্রক্রিয়ায় জড়িত কাজি, পুরোহিত, গ্রামপ্রধান, পিতামাতা বা আইনি অভিভাবক— কিংবা আরও যাঁরা এই প্রক্রিয়ায় উৎসাহ জোগাবেন, তাঁদের সকলকেই শাস্তির আওতায় আনা হবে।
প্রস্তাবিত আইনে বহুবিবাহের কারণে ভুক্তভোগী নারীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও ভাবা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, কেউ যদি বার বার একই অপরাধ করেন, তা হলে প্রতিটি অপরাধের জন্য নির্ধারিত শাস্তির দ্বিগুণ দণ্ড দেওয়া হবে। বিলে আরও প্রস্তাব করা হয়েছে, কোনও ব্যক্তি বহুবিবাহ করে দোষী সাব্যস্ত হলে তিনি রাজ্য সরকারের অধীনে কোনও সরকারি চাকরি পাবেন না। সরকারি কোনও প্রকল্পের সুবিধাও ভোগ করতে পারবেন না। পঞ্চায়েত, পুরসভা ইত্যাদির কোনও নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না তিনি।