বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।
নরেন্দ্র মোদীর পর অমিত শাহ। ছত্তীসগঢ়ে নির্বাচনী প্রচারে এসে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহও কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তুললেন মাওবাদীদের সমর্থনের অভিযোগ।
রমন সিংহের নেতৃত্বে ছত্তীসগঢ়কে মাওবাদীদের কবল থেকে প্রায় মুক্ত করতে সফল হয়েছে বিজেপি সরকার। তিন বারের মুখ্যমন্ত্রীকে এই কৃতিত্ব দিয়ে রায়পুরের জনসভায় দলের নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। যদিও নির্বাচনের মাত্র দু’দিন আগে ইস্তাহার প্রকাশ করায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে।
রায়পুরের জনসভায় অমিত শাহের বক্তব্যে বার বার ঘুরে ফিরে এসেছে মাও প্রসঙ্গই। কংগ্রেসের প্রতি অমিত শাহের প্রশ্ন, ‘‘রাজ্যে উন্নয়নের কথা কংগ্রেসের মুখে সাজে না। কারণ কংগ্রেস সেই মাওবাদীদের হাত ধরাধরি করে, যারা এই অঞ্চলে লাগাতার হিংসাত্মক কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে।’’
একই সঙ্গে তিন দফায় বিজেপির শাসনকালে অনুন্নয়নের আঁতুড়ঘর থেকে কী ভাবে বিদ্যুৎ ও সিমেন্ট উৎপাদনের কেন্দ্র হয়ে উঠল ছত্তীসগঢ়, সেই ফিরিস্তিও দেন অমিত শাহ। গত ১৫ বছর ধরে সেই লাগাতার উন্নয়নের ধারা জারি রাখার জন্যই ছত্তীসগঢ়ে ফের নির্বাচিত হবেন রমন সিংহ, রায়গড়ের জনসভায় এই ভাষণই দেন বিজেপি সভাপতি।
নির্বাচনের ঠিক আগেই একাধিক নাশকতামূলক ঘটনা ঘটিয়ে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিয়েছে মাওবাদীরা। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে মাওবাদীদের গুরুত্ব দিচ্ছে বিজেপি, তা প্রমাণিত অমিত শাহের বক্তব্যেই। কারণ, নিজেদের শক্তি আছে, এই রকম এলাকাগুলিতে ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছে তাঁরা। সে ক্ষেত্রে এই সব অঞ্চলে কত সংখ্যক মানুষ ভোট দিতে আসছেন তার উপর নির্ভর করছে অনেক কিছুই।
আরও পড়ুন: ‘শহুরে নকশালদের বিপ্লবী বলছে কংগ্রেস!’, নির্বাচনী সভায় অভিযোগ মোদীর
যদিও বয়কটের ডাক উপেক্ষা করে সাধারণ মানুষ যাতে ভোট দিতে আসেন তার জন্য আসরে নেমেছে নির্বাচন কমিশন। কোনও কোনও এলাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের পোস্টার আর হোর্ডিং ছাপিয়ে গিয়েছে নির্বাচন কমিশনের পোস্টার। সেখানে সাধারণ মানুষকে ভোট দিতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
চুপ করে নেই কংগ্রেসও। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর ‘আরবান নকশাল’ কটাক্ষের জবাব দিতে তারা বেছে নিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াকেই। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তারা লিখেছে, ‘‘প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, ছত্তীসগঢ়ে আদিবাসীদের ঘরবাড়ি আর গ্রামে ‘আরবান নকশাল’রা আগুন জ্বালায়নি। বিজেপি সরকারকে রক্ষা করতে যাঁরা ভয়ঙ্কর অপরাধ করে চলেছে, তাঁরাও কেউ ‘আরবান নকশাল’ নন।’’
আরও পড়ুন: ছত্তীসগ়ঢ়ে ক্ষমতায় এলে ১০ দিনের মধ্যেই ঋণ মকুব, আশ্বাস রাহুলের
আগামী ১২ নভেম্বর ছত্তীসগঢ় বিধানসভায় প্রথম দফার নির্বাচন। দ্বিতীয় তথা শেষ দফার নির্বাচন ২০ নভেম্বর। মুখে উন্নয়নের কথা বললেও আসলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ক্যারিশমার উপরে ভরসা করেই ভোট বৈতরণী পেরোতে চাইছে বিজেপি। অন্যদিকে কৃষক ও আদিবাসীদের ক্ষোভই লক্ষ্য কংগ্রেসের।
কংগ্রেস ও বিজেপি এই দ্বিমুখী লড়াইয়ের মাঝে রাজ্য মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যায় নিরাপত্তাবাহিনী। মাও নাশকতা থেকে নির্বাচনকে মুক্ত রাখতে কড়া নিরাপত্তার বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা রাজ্যকেই।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)