Karnataka CM Siddaramaiah

‘অপমান বরদাস্ত করব না’! মঞ্চে ডেকে চড় মারার চেষ্টা কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর, ইস্তফা সেই আইপিএস আধিকারিকের

ঘটনার সূত্রপাত ২৮ এপ্রিল। কংগ্রেসের একটি প্রতিবাদসভা ছিল বেলগাভিতে। সেখানে যান মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। সেই সভায় নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এনভি বরমানি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৫ ১৩:২০
Share:

সভামঞ্চে আইপিএস আধিকারিককে চড় মারার চেষ্টার অভিযোগ কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। ছবি: সংগৃহীত।

ভরা জনসভায় তাঁকে মঞ্চে ডেকে চড় মারার চেষ্টা করা হয় বলে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। এ বার সেই পুলিশকর্তা ইস্তফা দিয়ে বললেন, ‘‘কোনও মতে চড় এড়িয়েছি। কিন্তু যে ভাবে জনসমক্ষে অপমান করা হল, তা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।’’ নিজের ইস্তফাপত্র স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েও দিয়েছেন বলে ওই পুলিশকর্তার দাবি। সেই ঘটনার পর থেকে মানসিক ভাবেও বিপর্যস্ত বলে জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

তবে তাঁর ইস্তফাপত্র গ্রহণ করা হবে কি না, তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে সূত্রের খবর। ঘটনার সূত্রপাত গত ২৮ এপ্রিল। দামবৃদ্ধি নিয়ে কংগ্রেসের একটি প্রতিবাদসভা ছিল বেলগাভিতে। সেখানে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। সভামঞ্চে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন বেলগাভির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) এনভি বরমানি। মঞ্চের কাছেই বিজেপির কিছু মহিলা কর্মী বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। তাতে বিরক্ত হন মুখ্যমন্ত্রী। এমন পরিস্থিতির মুখে হঠাৎ মেজাজ হারিয়ে ফেলেন তিনি। মঞ্চে তখন দাঁড়িয়ে ছিলেন এএসপি বরমানি। তাঁর দাবি, মঞ্চ থেকেই তাঁকে উদ্দেশ করে মুখ্যমন্ত্রী চিৎকার করে জানতে চান, ‘‘এখানকার পুলিশ সুপার কে? বেরিয়ে যান এখান থেকে!’’ তার পরই তিনি চড় মারতে উদ্যত হন।

এএসপি জানিয়েছেন, কোনও রকমে তাঁর চড় এড়িয়েছেন। কিন্তু যে ভাবে তাঁকে ভরা মঞ্চে অপমান করা হয়েছে, তা কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। এএসপির কথায়, ‘‘চড় গালে লাগেনি ঠিকই, কিন্তু জনসমক্ষে এই অপমান দু’দিন ধরে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়েছে। গোটা রাজ্য, দেশ এই দৃশ্য দেখেছে।’’ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর একটা সম্মান রয়েছে। তাঁর সম্মান বজায় রাখতে, তাঁর মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখতে এবং পুলিশের মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখতে সেই ঘটনার পর নীরবে মঞ্চ ছেড়েছেন তিনি। তবে সেই ঘটনা তাঁকে অত্যন্ত ধাক্কা দিয়েছে বলে দাবি এএসপির। তাঁর কথায়, ‘‘সে দিনের ঘটনায় সভার অনেকেই স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন। শ্মশানে যেমন নীরবতা থাকে, কয়েক মুহূর্তের জন্য সে রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। আমার স্ত্রী এবং সন্তানেরা ভেঙে পড়েছে।’’ এএসপি বরমানি আরও জানিয়েছেন, সে দিনের ঘটনার পর তাঁর দফতরের শীর্ষকর্তারা দেখা করেন। তাঁরা কিছু একটা আঁচ করতে পেরেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘৩১ বছর ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে কর্নাটক পুলিশে কাজ করছি। এই উর্দির সঙ্গে আমার আত্মার সম্পর্ক। মাকে যেমন শ্রদ্ধা করি, আমার উর্দিকেও তেমনই শ্রদ্ধা করি।’’

Advertisement

সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী নিজেও এএসপি বরমানির সঙ্গে দেখা করেছেন। তবে তাঁদের মধ্যে কী কথা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আসেনি। কিন্তু তার পরেও বরফ গলেনি। তাই তাঁর ইস্তফাপত্র যাতে গ্রহণ করে দ্রুত অব্যাহতি দেওয়া হয়, স্বরাষ্ট্র দফতরের কাছে সেই আর্জি জানিয়েছেন বরমানি।

পুলিশকর্তার ইস্তফা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা রাজ্যে। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার এই কাণ্ড নিয়ে যখন সমালোচনার ঝড় বইছে, ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ করতে আসরে নেমে পড়েছেন খোদ রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বর। সূত্রের খবর, তিনি বরমানিকে ফোন করেন। এই ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন। শুধু তা-ই নয়, তাঁকে নতুন পদে বহাল করার আশ্বাসও দিয়েছেন। সরকারের দাবি, সেই মুহূর্তে ঘটনাটি ঘটে গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ময়দানে নেমে পড়েছে বিজেপিও। রাজ্য বিজেপির কটাক্ষ, ‘‘কী ধরনের অপমান সহ্য করতে হয়েছে পুলিশকর্তাকে, তা আমরা উপলব্ধি করতে পারছি। সব কিছুই হয়েছে ‘লটারি সিএম’ সিদ্দারামাইয়ার ঔদ্ধত্যের কারণে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement