গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
ভয় দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে ১১ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। তার পরেও পরিত্রাণ পাননি বেঙ্গালুরুর বিদ্যুৎ দফতরের কর্মী। ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ হয়ে অবসাদে শেষমেশ আত্মহত্যা করলেন কুমার নামে ওই যুবক। বুধবার বাড়ির কাছে একটি গাছ থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পাশে পড়ে থাকা চিরকুট থেকে জানা গিয়েছে আত্মহত্যার কারণ। বস্তুত, ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ হয়ে এটাই সম্ভবত প্রথম আত্মহত্যার ঘটনা ঘটল ভারতে।
পুলিশ সূত্রে খবর, কর্নাটকের কেলাগেরের বাসিন্দা কুমার চাকরি করতেন ‘ব্যাঙ্গালোর ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি’ বা বেসকমে। সম্প্রতি ওই বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীর কাছে উড়ো ফোন এসেছিল। ফোন ধরতেই অন্য প্রান্ত থেকে দাবি করা হয়, সিবিআই থেকে কথা বলা হচ্ছে। ঘাবড়ে যান কুমার। অভিযোগ, তাঁকে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ করে এর পর চলতে থাকে ধমক-চমক।
বুধবার কুমারের একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেখান থেকে জানা যাচ্ছে, বিদ্যুৎ দফতরের ওই কর্মীকে ফোন করেছিলেন জনৈক বিক্রম গোস্বামী। তিনি নিজেকে সিবিআই অফিসার বলে পরিচয় দেন। তার পর কুমারকে নানা রকম ভাবে মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা চাইতে থাকেন। এমনকি, তাঁকে বলা হয় সিবিআইয়ের তরফে তাঁর নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। বাঁচতে চাইলে যা বলছেন, তা শুনতে হবে।
চিঠিতে কুমার লিখে গিয়েছেন, ‘সিবিআই অফিসারের’ কথামতো প্রথম দফায় ১ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা পাঠান একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। কিন্তু তার পরেও হুমকি আসতে থাকে। বার বার টাকা চেয়ে ফোন আসে। বলা হয়, এই বার মামলা মিটে যাবে। এই ভাবে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায় ১১ লক্ষ টাকা পাঠিয়েছেন বিদ্যুৎ দফতরের কর্মী। কিন্তু তার পরেও ছাড়া পাননি। চিঠির একটি জায়গায় কুমার লিখেছেন, ‘‘আমি হুমকি পেতে পেতে ক্লান্ত। আমি নিজেকে শেষ করে দিচ্ছি। কারণ এই হেনস্থা আর সহ্য হচ্ছে না। মানসিক এবং শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছি।’’
যে নম্বর থেকে তাঁকে ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়, সেই নম্বরও চিঠিতে লিখে গিয়েছেন ওই যুবক। তদন্তের স্বার্থে মৃতের ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। ধরার চেষ্টা চলছে জালিয়াতদের।