৩৭০-এর পরে উত্তর-পূর্বে আশঙ্কা ৩৭১ নিয়ে

জম্মু-কাশ্মীরের জন্য ৩৭০ অনুচ্ছেদ  প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে ‘অশনি সংকেত’ আখ্যা দিয়েছে মিজোরামের বিরোধী দলগুলি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৯ ০৩:০৫
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

সংবিধানের ৩৭০ ও ৩৫এ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার করায় উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন রাজ্য ও স্বশাসিত এলাকাগুলিতে আশঙ্কা ছড়িয়েছে। দেশের এই অংশে সংবিধানের ৩৭১এ ও ৩৭১জি অনুচ্ছেদে বিভিন্ন ধরনের সংরক্ষণের সুবিধা পান ভূমিপুত্ররা। দিতে হয় না কর। এমনকি পার্বত্য এলাকায় জনজাতিদের জমির উপরে ও নীচে থাকা অরণ্য বা খনিজ সম্পদের উপরেও অনেক ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত অধিকার স্বীকৃত।

Advertisement

জম্মু-কাশ্মীরের জন্য ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে ‘অশনি সংকেত’ আখ্যা দিয়েছে মিজোরামের বিরোধী দলগুলি। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, কংগ্রেসের লালথানহাওলা বলেন, ‘‘এই ঘটনা মিজোরাম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, অরুণাচলের মতো রাজ্যের পক্ষে আতঙ্কের।’’ কংগ্রেস মুখপাত্র লাল লিয়াংচুঙ্গা জানান, ‘‘৩৭১এ অনুচ্ছেদে হাত পড়লে রুখে দাঁড়াবেন মিজোরা। নিজেদের অধিকার রক্ষায় আমরা আত্মবলিদানেও প্রস্তুত।’’

নাগাল্যান্ডের বৃহত্তম জনজাতি মঞ্চ নাগা হো হো-র সভাপতি চুবা ওঝুকুমের মতে, ‘‘কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অগণতান্ত্রিক। আমরাও অধিকার হারানোর আশঙ্কায় ভুগছি। ভারত-নাগা শান্তি আলোচনা চলাকালীন কেন্দ্র নাগাদের অধিকারে হাত দিলে ফল খারাপ হবে। ভারতীয় সংবিধানের ধর্মীয়, সামাজিক কোনও অনুচ্ছেদ এখানে কার্যকর নয়। দেশীয় আইন, ঐতিহ্য অনুযায়ী নাগাল্যান্ডে অনেক কিছু নিয়ন্ত্রিত হয়। সম্পত্তি ও জমির হস্তান্তরও নিজস্ব নিয়মে চলে।’’

Advertisement

সংবিধানের ৩৬৮ নম্বর অনুচ্ছেদের ভিত্তিতে ৩৭১ নম্বর অনুচ্ছেদে অন্তত ন’টি রাজ্যকে বেশ কিছু বিশেষ সুবিধা ও অধিকার দেওয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্র ও গুজরাতও রয়েছে সেই তালিকায়। ৩৭১বি অনুচ্ছেদে রয়েছে অসমের কথা। ওই অনুচ্ছেদে বলা অধিকার বলে রাজ্যপালকে অসমের জনজাতি এলাকার প্রতিনিধিদের নিয়ে বিধানসভার কমিটি গঠনের অধিকার দিতে পারেন রাষ্ট্রপতি। এ ছাড়াও আছে ২৪৪এ। ১৯৬৯ সালে যোগ করা এই অনুচ্ছেদে অসমকে স্বশাসিত পরিষদ গঠনের বিশেষ অধিকার দেওয়া রয়েছে। ৩৭১ডি ও ই অনুচ্ছেদে অন্ধ্রপ্রদেশে শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষণ-সহ কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে রাষ্ট্রপতির হাতে। অরুণাচল প্রদেশের আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ অধিকার দেওয়া রয়েছে রাজ্যপালকে। তিনি নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত উল্টে দিতে পারেন ৩৭১এইচ অনুচ্ছেদে-এর ভিত্তিতে। এই সব অনুচ্ছেদ নিয়ে কেন্দ্র নাড়াঘাঁটা করলে রাজ্যগুলির পরিস্থিতি আমুল বদলে যেতে পারে। জম্মু-কাশ্মীরের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের পদক্ষেপের ধরন সেই আশঙ্কার দরজাটাই খুলে দিল বলে মনে করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন