Bihar Election

মহারাষ্ট্র থেকে শিক্ষা নিয়েই নীতীশকে নেতৃত্ব

যাঁকে ঘিরে এই টানাপড়েন, সেই নীতীশ আজ সারা দিন কোনও মন্তব্য করেননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২০ ০৫:২০
Share:

ফাইল চিত্র।

মহারাষ্ট্রের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে বিহারে ছোট শরিক নীতীশ কুমারকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিল বিজেপি। তবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে বাধ্য হলেও, ভিন্ন সুর শোনা গিয়েছে গিরিরাজ সিংহের মতো রাজ্য

Advertisement

বিজেপি নেতাদের গলায়। তাঁদের মতে, আগামী দিনে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হবেন বিজেপি থেকেই। ১৫ বছর আগে নীতীশের হাত ধরেই বিহারে প্রথম ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। কিন্তুতখন থেকেই জেডিইউ-এর ক্ষমতা খর্ব করে বড় শরিক হয়ে ওঠার চেষ্টা চালাচ্ছিল তারা। এ বার চিরাগ পাসোয়ানের দল লোক জনশক্তি পার্টির ভোট কাটার সৌজন্যে আসন সংখ্যার নিরিখে নীতীশের দলকে পিছনে ফেলে দিয়েছে বিজেপি। যদিও ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ কথা দিয়েছিলেন যে, এনডিএ জিতলে নীতীশই মুখ্যমন্ত্রী হবেন, তবু গত কাল ফলাফলের ছবিটা স্পষ্ট হতেই রাজ্য বিজেপির কেউ কেউ দলের কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করার কথা বলতে শুরু করেন।

এই অবস্থায় নীতীশকে দলে টানতে তলায় তলায় প্রস্তুতি শুরু করে দেয় কংগ্রেস। সেটা জানতে পেরে মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা সুশীল মোদী জানিয়ে দেন, দলের দেওয়া প্রতিশ্রুতি মতো নীতীশই মুখ্যমন্ত্রী হবেন। বিজেপি সূত্রের মতে, মুখ্যমন্ত্রিত্বের প্রশ্নে গোঁ ধরে থেকে মহারাষ্ট্রের মতো বিহারে ক্ষমতা হারাতে ইচ্ছুক নয় বিজেপি। কারণ, সংখ্যার বিচারে আরজেডি এবং কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়ে ফেলা নীতীশের পক্ষে সম্ভব।

Advertisement

বস্তুত, এ দিন সকালেই নীতীশকে এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে আসার ডাক দেন কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ। তিনি টুইট করেন, “নীতীশজি বিহার আপনার জন্য ছোট হয়ে গিয়েছে। বিহার ছেড়ে আপনি কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে আসুন এবং সমস্ত ধর্মনিরপেক্ষ সমাজবাদী মতবাদের বিশ্বাসীদের একজোট করতে সাহায্য করুন।’’ পরিস্থিতি জটিল

করে রাজ্য রাজনীতিতে নীতীশের বিরোধী বলে পরিচিত বিজেপি নেতা গিরিরাজ কিশোর সাংবাদিকদের বলেন, আজ না হয় কাল, বিজেপির কেউই মুখ্যমন্ত্রী হবেন।

যাঁকে ঘিরে এই টানাপড়েন, সেই নীতীশ আজ সারা দিন কোনও মন্তব্য করেননি। এক দিকে দলের মধ্যে পরস্পরবিরোধী বার্তা, অন্য দিকে নীতীশের নীরবতা দেখে প্রমাদ গোনেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। এর পরেই অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ নেতা ভূপেন্দ্র যাদব এবং দলের তরফে বিহার ভোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত দেবেন্দ্র ফডণবীস জানিয়ে দেন, নীতীশই মুখ্যমন্ত্রী হবেন। ফডণবীস বলেন, “আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিল এনডিএ জিতলে মুখ্যমন্ত্রী হবেন নীতীশ। আমরা সেই প্রতিশ্রুতিরক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’’ রাতে দিল্লিতে দলের সদর দফতরে এসে মোদীও বলেন, ‘‘নীতীশজির নেতৃত্বেই বিহারবাসীর আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবে এনডিএ।’’ আর জয়ের জন্য সহযোগিতা করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে টুইট করেন নীতীশ।

তবে প্রশ্ন হল, ছোট শরিক হয়েও কি মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে বসতে রাজি হবেন নীতীশ? কারণ, এ বার সরকার চালাতে গিয়ে তাঁকে যে প্রতি পদেই বিজেপির মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে, সে কথা কবুল করছেন জেডিইউ নেতারাই। বিজেপির হস্তক্ষেপ মেনে সরকার চালানো কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে দলে সংশয় রয়েছে। জেডিইউ নেতাদের একাংশের মতে, জোট জিতলেও এ বারের ভোটে তাঁর দলের যে সম্মানহানি হয়েছে, তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন নীতীশ। ভাবমূর্তির ব্যাপারে তিনি যে রকম সচেতন, তাতে স্বেচ্ছায় মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছেড়েও দিতে পারেন বলে দলের অনেকের ধারণা। সূত্রের মতে, চলতি সপ্তাহেই দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বসে সরকার গড়ার প্রশ্নে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন নীতীশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন