পুলিশের গুলিতে আহত দুষ্কৃতী। ছবি: সংগৃহীত।
দুষ্কৃতী ধরতে নয়া অভিযান শুরু করল বিহার পুলিশ। নতুন এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন ল্যাংড়া’। কিন্তু অদ্ভুত এই নাম কেন দেওয়া হল, তার নেপথ্য কারণও বেশ চমকপ্রদ। দুষ্কৃতীদের বাড়বাড়ন্তে রাশ টানতে রাজ্য পুলিশ বিহার জুড়ে অভিযান চালাচ্ছে গত তিন মাস ধরে। বিহারে দুষ্কৃতীরাজ ঠেকাতেই এই অভিযান শুরু হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
পুলিশ সূত্রে খবর, এই অভিযান শুরু হতেই দুষ্কৃতীরা কেউ কেউ আত্মসমর্পণ করছে। কেউ আবার পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে। পাল্টা পুলিশকেও গুলি চালাতে হচ্ছে। ফলে উত্তরপ্রদেশের কায়দায় এ বার বিহারেও ‘এনকাউন্টার’ শুরু হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্যে জড়িয়ে পড়া দুষ্কৃতীদের ধরতে তাদের পা লক্ষ্য করে গুলি চালানো হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে পুলিশকে। আর সেই ঘটনার সূত্র ধরেই এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন ল্যাংড়া’।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত তিন মাসে ৯ দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে দুষ্কৃতীরা। পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি, কখনও আবার পুলিশের অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে পালানোর চেষ্টার মতো ঘটনাও ঘটছে। সে ক্ষেত্রে তখন সেই সব দুষ্কৃতীকে ধরতে বাধ্য হয়ে তাদের পা লক্ষ্য করে গুলি চালাতে হচ্ছে পুলিশকে। ফলে দ্রুত গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে। সম্প্রতি কয়েকটি ‘এনকাউন্টার’-এর ঘটনায় ‘অপারেশন ল্যাংড়া’ নিয়ে আরও চর্চা জোরালো হয়েছে বিহারে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৭ অগস্ট আলমগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে গুলিতে আহত হয় বিজয় সাহনি নামে এক দুষ্কৃতী। ১৫ অগস্ট দিব্যাংশু নামে আরও এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়। উত্তরপ্রদেশের এই দুষ্কৃতী বিহারে দৌরাত্ম্য চালাচ্ছিল। পুলিশের গুলিতে আহত হয় সে। ৬ অগস্টে ফুলওয়াড়িশরিফে রোশন নামে এক দুষ্কৃতী পুলিশের অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। তখন তাকে গুলি করা হয়। পটনার হাসপাতালে ঢুকে চন্দন মিশ্রকে খুনে ঘটনায় জড়িত দুই শুটার বলবন্ত এবং রবিরঞ্জনকেও ‘অপারেশন ল্যাংড়া’য় গত ২২ জুলাই ধরা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এ ছাড়াও গত ২৫ জুন গ্যাংস্টার রাজা জেপিকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। এক পুলিশকর্মীর উপর হামলা চালিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। পুলিশের সঙ্গে ‘এনকাউন্টারে’ তাকে ধরা হয়। জুনে আরও তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের মাথার দাম ছিল ২৫ হাজার টাকা।
বিহার পুলিশের ডিজি বিনয় কুমার বলেন, ‘‘যদি দুষ্কৃতীরা পুলিশকর্মীদের উপর হামলা চালায়, তা হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবেই। আমাদের কর্মীদের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। কোনও আইনভঙ্গকারীকে আইনকে চ্যালেঞ্জ করতে দেব না।’’