মুখ্যমন্ত্রী কেজরীবালের সঙ্গে বাদানুবাদে দিল্লি বিজেপির সভাপতি তথা সাংসদ মনোজ তিওয়ারি। ছবি: পিটিআই।
ধুন্ধুমার বেধে গেল কেজরীবালের বাড়িতে। সিলিং অভিযান বন্ধ করার দাবি নিয়ে যৌথ ভাবে উপরাজ্যপালের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ছিল আম আদমি পার্টি (আপ) পরিচালিত দিল্লি সরকার এবং বিজেপি পরিচালিত দিল্লি নগর নিগমগুলির। সেই লক্ষ্যেই বৈঠকের আয়োজন হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের বাসভবনে। সেখানে বিজেপি প্রতিনিধিদের হেনস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে বৈঠক থেকে ওয়াক আউট করলেন বিজেপির প্রতিনিধিরা। আর আপ জানাল, সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতিতে বৈঠক করতে অস্বস্তি বোধ করছিল বিজেপি, তাই বেরিয়ে গেল মাঝপথেই।
বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে এসে মুখ্যমন্ত্রী কেজরীবালকে তীব্র আক্রমণ করেছে বিজেপি। ‘হেনস্থা এবং আক্রমণের পরিকল্পিত চেষ্টা’ হয়েছে বলে বিজেপি দাবি করেছে। ‘মুখ্যমন্ত্রীর সমর্থকরা’ হামলা চালিয়েছে, অভিযোগ এমনও। পাঁচ আপ বিধায়কের বিরুদ্ধে হেনস্থা করার অভিযোগ দায়ের করেছে বিজেপি।
পাল্টা সমালোচনায় সরব হয়েছে আপ নেতৃত্বও। বিজেপি প্রতিনিধিরা মাঝপথেই বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন, কারণ তাঁরা সেখানে মিডিয়ার উপস্থিতি মেনে নিতে পারছিলেন না— দাবি আপের। কেজরীবাল বলেছেন, ‘‘এর মধ্যে গোপনীয়তার কিছু নেই। এটা কারও ব্যক্তিগত বিষয় নয়। এটা জনসাধারণের বিষয়। আমি তাঁদের অনুরোধ করেছিলাম। বলেছিলাম বসুন, আলোচনা করুন এবং এই সিলিং সংক্রান্ত সমস্যার একটা যৌথ সমাধান খুঁজে বার করুন। কিন্তু তাঁরা বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন।’’
আরও পড়ুন: সংসদে রাহুলের আসন প্রথম সারিতে
কেজরীবালের বাড়ি থেকে বিজেপি প্রতিনিধি দলের বেরিয়ে আসার যে ছবি দেখা গিয়েছে, তা খুব শান্তিপূর্ণ নয়। ধস্তাধস্তি এবং প্রবল স্লোগানের মাঝে কোনওক্রমে ভিড় সরিয়ে বেরিয়ে আসছেন বিজেপি নেতারা, এমন ছবিই দেখা গিয়েছে। বিজেপি বিধায়ক বিজেন্দ্র গুপ্ত বলেছেন, ‘‘আমাদের প্রতিনিধি দলকে ডেকে নিয়ে গিয়ে হেনস্থা করা হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: নোটবন্দির মতো ‘বৈপ্লবিক’ পদক্ষেপ দরকার নেই
বিজেপির তিন বিধায়ক, তিন সাংসদ এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিল্লির দুই মেয়র বিজেপির তরফে বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। আপের তরফে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী কেজরীবাল নিজে এবং তাঁর মন্ত্রী ও বিধায়করা। বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পরে কেজরীবাল বলেন, ‘‘আমি দুঃখিত যে, বৈঠকটা হল না। আমরা সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানাব। আমরা চাই সিলিং বন্ধ হোক।’’
দিল্লিতে যে সব আবাসিক সম্পত্তি বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলিকে সিল করে দেওয়া শুরু হয়েছে। অনেক ব্যবসায়ী এতে সঙ্কটে পড়েছেন। যৌথ ভাবে উপরাজ্যপাল অনিল বৈজলের দ্বারস্থ হয়ে আপ ও বিজেপি এই সিলিং অভিযান বন্ধ করার দাবি জানাবে বলে স্থির হয়েছিল। কিন্তু বৈঠক ভেস্তে যাওয়ায় সেই যৌথ দৌত্য আপাতত বিশ বাঁও জলে।