মায়া-অখিলেশ জোটে কপালে ভাঁজ বিজেপির

তখন লখনউয়ে জোটের ঘোষণা করেছেন বুয়া-বাবুয়া। রামলীলা ময়দানের সম্মেলন মঞ্চ ছেড়ে পিছনে অস্থায়ী ‘পিএমও’তে চলে গেলেন নরেন্দ্র মোদী। একটু পরে ফিরে এলেন। অমিত শাহ নিজের মোবাইল দেখিয়ে আলোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। 

Advertisement

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৪৫
Share:

তখন লখনউয়ে জোটের ঘোষণা করেছেন বুয়া-বাবুয়া। রামলীলা ময়দানের সম্মেলন মঞ্চ ছেড়ে পিছনে অস্থায়ী ‘পিএমও’তে চলে গেলেন নরেন্দ্র মোদী। একটু পরে ফিরে এলেন। অমিত শাহ নিজের মোবাইল দেখিয়ে আলোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে।

Advertisement

মঞ্চে তখন বলছেন যোগী আদিত্যনাথ। তার পরে বললেন উত্তরপ্রদেশের উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য। এঁদের দিয়ে বলিয়ে মোদীর বক্তৃতা পিছনো হল। আর বক্তৃতায়? মোদী নিজে তো বটেই, অমিত শাহ, জেটলি, যোগী মায় নিতিন গডকড়ীকে দিয়েও বলানো হল, মোদীর ভয়ে একজোট হচ্ছেন মায়াবতী-অখিলেশ। মোদী বললেন, এই প্রথম কোনও এক ব্যক্তির বিরোধিতা করতে বিরোধীরা মহাজোট করছে। যারা এক সময় মধ্যগগনে থাকা কংগ্রেসের বিরোধিতা করত, আজ ‘রসাতলে’ যাওয়া কংগ্রেসের কাছে তারা আত্মসমর্পণ করছে। তিনি বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের লড়াই ‘মজবুত বনাম মজবুর’ সরকারের।’’

কিন্তু এ সব তো মুখের কথা। একঝাঁক নেতার অভয়বাণীতেও দলের কাঁপুনি থামল কোথায়? সম্মেলনের পরে উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা নেতাদের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। সেই বৈঠকে আশঙ্কার কথা অকপটে কবুলও করেছেন তাঁরা। তার ভিত্তিতে অমিত শাহের নেতৃত্বে উত্তরপ্রদেশের বিকল্প কৌশল তৈরি হয়েছে।

Advertisement

সেই কৌশল কী? এক, প্রায় অর্ধেক প্রার্থী বদলে ফেলা হবে উত্তরপ্রদেশে। দুই, টিকিট না পাওয়া সপা-বসপার অসন্তুষ্ট নেতাদের প্রার্থী করা হবে। তিন, যেখানে সপা বা বসপা সংখ্যালঘু প্রার্থী দেবে, সেখানে মেরুকরণ করা হবে। চার, ভোটের আগে রামমন্দিরের হাওয়া তোলা হবে, কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে মামলা চললে কোনও আইন বা অধ্যাদেশ না-ও আনা হতে পারে। আজ মোদীও অযোধ্যার প্রসঙ্গ তুলে মামলায় বাধা দেওয়ার জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করেন। কিন্তু অযোধ্যা নিয়ে আইন আনার যে প্রত্যাশা দলের একাংশের ছিল, তার কোনও ইঙ্গিত দেননি।

আরও পড়ুন: ঘুম ছোটাব, টিপুকে নিয়ে হুঙ্কার মায়ার

উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদে যোগী আদিত্যনাথের আগে অন্যতম দাবিদার ছিলেন সতীশ মাহানা। তিনি বললেন, ‘‘লোকসভা ভোটের লড়াইয়ে মানুষ বাছবেন প্রধানমন্ত্রীকে। সেখানে ধোপে টিকবে না এই জোট।’’ অমিত বলছেন, ‘‘বিরোধী জোটের সঙ্গে একবার মোদীর মোকাবিলা হয়েই যাক। ৫০ শতাংশ ভোটের বেশি লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে বিজেপি।’’ অরুণ জেটলির কথায়, ‘‘কংগ্রেসের শাহজাদা, বাংলার দিদি, অন্ধ্রের বাবু আর উত্তরপ্রদেশের বহেনজির হিম্মত নেই মোদীর সামনে দাঁড়ানোর।’’

মুখে যা-ই বলুন দলের আশঙ্কা, মায়া-অখিলেশের জোটে লোকসানই হবে বিজেপির। আর উত্তরপ্রদেশে ধরাশায়ী হলে যে শিরে সংক্রান্তি!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন