দু’জন পেঁয়াজ চাষ করতেন। আর এক জনের ফলতো আলু। বিজেপি শাসিত দুই রাজ্য মহারাষ্ট্র ও উত্তরপ্রদেশে ফসলের দাম না পেয়ে ঋণের দায়ে এই তিন চাষির আত্মহত্যার ঘটনা এখন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের প্রবল অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে।
পেঁয়াজ চাষিদের কান্না নতুন কিছু নয়। তবে এ বার ফসল তুলে মহারাষ্ট্রের চাষিরা এতটাই হতাশ হয়েছেন যে কিছু দিন আগেই লাভের অঙ্ক হাজার টাকার পুরোটাই প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে পাঠিয়ে দিয়ে সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছিলেন এক পেঁয়াজ চাষি। সেই ধারা অব্যাহত। গত কাল আহমদনগর জেলার এক চাষি ২৬৫৭ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করে লাভ করেছেন মাত্র ৬ টাকা। সেই টাকা মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসের ত্রাণ তহবিলে পাঠিয়ে দিয়ে নিজের ঋণ মেটানোর আশায় রাস্তায় ভিক্ষে করতে বেরিয়েছেন কৃষক শ্রেয়াস আভালে।
উত্তর মহারাষ্ট্রের বাগলান তালুকে ৪৪ বছর বয়সি চাষি তাতিয়াভাউ খেরনার আর ৩৩ বছর বয়সি মনোজ ধনদাগের মৃত্যুর পিছনে কারণ এক। শুক্রবার খেরনার তাঁর পেঁয়াজ ক্ষেতে গলায় দড়ি দেন। আত্মীয়েরা দাবি করেছেন, ৫০০ কুইন্টাল পেঁয়াজ মজুত রেখেও বিক্রি করতে পারেননি তিনি। বাজারে দেনা ১১ লক্ষ টাকা। কী করবেন বুঝে উঠতে না পেরেই আত্মহত্যা। ওই শুক্রবারেই আর এক চাষি মনোজও নিজের ক্ষেতে বসেই বিষ খান। পরে মৃত্যু হয় তাঁর। তাঁর মাথায় ঋণের বোঝা ছিল ২১ লক্ষ টাকা। আত্মীয়েরা জানাচ্ছেন, তিনিও ফসল বিক্রি করতে পারছিলেন না।
আরও পড়ুন: মৃতদেহ নিয়ে একের পর এক সভা বিজেপির, মঙ্গলবার বন্ধের ডাক
চাষিদের এই সঙ্কট মহারাষ্ট্র ছাপিয়ে উত্তরপ্রদেশেও। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ যখন মন্দির-মূর্তি বানানোর প্রচারে ব্যস্ত, তখনই কনৌজের সিয়ারমাউ গ্রামের আলুচাষি ৫০ বছর বয়সি সুভাষ পাল সোমবার গলার দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। মৃত্যুর আগে লিখে গিয়েছেন, ১৬ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তিন লক্ষ টাকা দেনা ছিল। শোধ করে পারছিলেন না। সুইসাইড নোটে জেলাশাসকের নামও লিখে গিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: সীমান্তের ব্লক অফিসে স্তন্যপান করানোর ঘর
পরে অবশ্য সুভাষের বাড়িতে পৌঁছে যান জেলা প্রশাসনের কর্তারা। আশ্বাস দিয়ে এসেছেন, মৃতের পরিবারকে সব রকম সাহায্য দেওয়া হবে।