দীর্ঘ টানাপড়েনের পরে অবশেষে মহারাষ্ট্রে জোট অটুট রাখার কথা ঘোষণা করল বিজেপি ও শিবসেনা। আর বিরোধী শিবিরে সমঝোতার এমন ইঙ্গিত পেয়েই শাসক জোটের এনসিপি ও কংগ্রেসের নেতারাও পুরনো সম্পর্ককে অটুট রাখতে সক্রিয় হয়েছেন।
মহারাষ্ট্রে বিজেপি ও শিবসেনার শীর্ষস্থানীয় নেতারা আজ মুম্বইয়ে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা করেছেন, অনেকগুলি প্রস্তাব নিয়ে তাঁদের আলোচনা বাকি। তবে জোট অটুট থাকবে। রফাসূত্র খুঁজতে গিয়ে এই শিবিরের চারটি ছোট দলের থেকে আসন কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। শিবসেনার শীর্ষনেতা উদ্ধব ঠাকরে যেহেতু প্রকাশ্যেই ‘মিশন ১৫০’-র কথা ঘোষণা করে দিয়েছেন, তাই তাঁদের পক্ষে ১৫০টি আসনের নীচে লড়া সম্ভব নয়। বিজেপিও গত বারের ১১৯টি আসন থেকে ৫-৭টি বাড়িয়ে নিয়ে মুখরক্ষা করতে চাইছে। তবে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম আগাম ঘোষণার জন্য শিবসেনার দাবিকে বিজেপি পিছিয়ে দিতে পেরেছে। তাদের মত, যে বেশি আসন পাবে, মুখ্যমন্ত্রী সে দলেরই হবে। তবে রাতের খবর, আসন কমানোর প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে শিবসেনা ও বিজেপি নেতৃত্বকে জোট ভাঙার হুমকি দিয়েছে ছোট দলগুলি।
পাশাপাশি, গত কাল মধ্যরাত থেকে কংগ্রেস ও এনসিপি নেতৃত্বের যে আলোচনা হয়েছে, তাতে ইঙ্গিত মিলছে যে নতুন করে জটিলতা তৈরি না হলে, দু’দল জোটবদ্ধ হয়েই লড়বে। আজ সন্ধ্যায় শরদ পওয়ারের মেয়ে তথা বারামতীর সাংসদ সুপ্রিয়া সুলে মন্তব্য করেছেন, “১৫ বছর ধরে কংগ্রেসকে সমর্থন করছে এনসিপি। ভবিষ্যতেও তা চালিয়ে যাবে।” সূত্রের খবর, মোট ২৮৮টি আসনের মধ্যে এনসিপিকে প্রায় ১৩০টি আসন ছাড়তে রাজি কংগ্রেস। তবে নির্বাচনের আগেই মুখ্যমন্ত্রী পদের ব্যাপারে এনসিপি নেতা অজিত পওয়ার (শরদ পওয়ারের ভাইপো) যে রফাসূত্র নিয়ে আলোচনা চাইছিলেন, সে ব্যাপারে কংগ্রেস রাজি হয়নি। বরং কংগ্রেস স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ভোটের পর এ সব ভেবে দেখা যেতে পারে। তা ছাড়া, ৭-৮টি আসনে খুঁটিনাটি কিছু বিষয় নিয়ে আজ বিকেলেও দু’দলের মধ্যে রফাসূত্র বেরিয়ে আসেনি।
সূত্র বলছে, সনিয়া ও শরদ পওয়ার উভয়েই জোটের পক্ষে। এই মুহূর্তে এনসিপি ছাড়া কংগ্রেসের উল্লেখযোগ্য কোনও শরিক নেই। তাই সনিয়া বিচ্ছেদে রাজি নন। আবার পওয়ারও বুঝতে পারছেন তাঁর ভাইপো দলে কর্তৃত্ব কায়েম করতে চাইছেন। সে জন্যই জোটের বিরোধিতা করছেন অজিত। কিন্তু তা হতে দিতে রাজি নন পওয়ার। এই পরিস্থিতিতে গত কাল সনিয়ার নির্দেশে নতুন করে এনসিপি নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন পৃথ্বীরাজ। শেষ পর্যন্ত কোনও অঘটন না ঘটলে কাল জোটের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে দু’দল।