পাকিস্তানকে জবাব দেওয়া হবেই। কিন্তু কোথায়, কখন, কী ভাবে জবাব দেওয়া হবে, তা ভারতই স্থির করবে। জানিয়েছে নয়াদিল্লি। —প্রতীকী ছবি।
নিয়ন্ত্রণরেখার এক পার থেকে অন্য পারে চলে গিয়েছে রক্তের দাগ। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, দুই ভারতীয় সেনার মুণ্ডচ্ছেদ করে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ফিরে গিয়েছে হামলাকারীরা। বুধবার এ কথাই জানাল ভারত সরকার। পাক সেনার যে সব সদস্য এবং কম্যান্ডার এর জন্য দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে কঠোর পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে পাকিস্তানকে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গোপাল বাগলে বুধবার এ কথা জানিয়েছেন। নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত পাক হাই-কমিশনার আবদুল বাসিতকেও তলব করেছিল ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক। পাকিস্তান হামলাকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না করলে ভারত যে চুপ করে থাকবে না, বাসিতকে তা খুব স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সোমবার পুঞ্চের কৃষ্ণা ঘাটি সেক্টরে পাক বর্ডার অ্যাকশন টিম (ব্যাট) যে বর্বর হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, তা নিয়ে বুধবার টুইট করেছেন ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গোপাল বাগলে। তিনি লিখেছেন, ‘‘ভারত সরকার (পাকিস্তানকে) জানিয়েছে, পাকিস্তানের যে সেনা এবং কম্যান্ডাররা এই জঘন্য কাজ করেছে, পাকিস্তানকে তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।’’
নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারতের সামরিক তৎপরতা প্রবল বেড়েছে সোমবারের পর থেকে। যে কোনও মুহূর্তে প্রত্যাঘাতের আশঙ্কা করছে পাকিস্তান। —ফাইল চিত্র।
চাপ বাড়ানো হয়েছে নয়াদিল্লির পাক দূতাবাসের উপরেও। বুধবারই পাক হাই-কমিশনার আবদুল বাসিতকে তলব করেছিল ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক। সোমবারের বর্বরোচিত হামলার আগে পাকিস্তানি সীমান্ত চৌকিগুলি থেকে যে কভার ফায়ারিং শুরু হয়েছিল, তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ— মন্তব্য বিদেশ মন্ত্রকের। ভারতের বিদেশ সচিব এস জয়শঙ্কর নিজেই আবদুল বাসিতকে অত্যন্ত কড়া বার্তা দিয়েছেন। ‘‘ভারতীয় সেনাদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে এবং রোজা নালায় রক্তের দাগ স্পষ্ট দেখিয়ে দিচ্ছে খুনিরা নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে গিয়েছে।’’ জয়শঙ্কর বুধবার আবদুল বাসিতকে এমনই বলেছেন বলে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: কভার ফায়ারের সুযোগ নিয়েই ঢুকেছিল ব্যাট, জবাব দেবই: বলল দিল্লি
সোমবার সকালে পুঞ্চের কৃষ্ণা ঘাটি সেক্টরে ভারতীয় বাহিনীর একাধিক সীমান্ত চৌকি পাক গোলাবর্ষণের শিকার হয়েছিল। দু’টি চোকির মাঝে টহলরত একটি টহলদারি দলও সেই হামলায় আক্রান্ত হয়। পাক কভার ফায়ারের সুযোগ নিয়ে ভারতের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকায় ঢুকে আসা পাক বাহিনী ব্যাট ভারতীয় সেনার নাইব সুবেদার পরমজিৎ সিংহ এবং বিএসএফ-এর হেড কনস্টেবল প্রেম সাগরের মুণ্ডচ্ছেদ করে তাদের ক্ষতবিক্ষত দেহ ফেলে যায়। ভারত জানিয়েছে, এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের উপযুক্ত জবাব পাকিস্তানকে দেওয়া হবে। কোথায়, কখন এবং কী ভাবে জবাব দেওয়া হবে, তা ভারতই স্থির করবে বলে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে পাকিস্তানের উপর কূটনৈতিক চাপ বাড়ানোও শুরু করে দিল ভারত।