ধৃত শিখর আগরওয়াল। ছবি: এএনআইয়ের টুইটার হ্যান্ডল থেকে সংগৃহীত।
বুলন্দশহর কাণ্ডে এ বার গ্রেফতার বিজেপির যুব নেতা। ধৃতের নাম শিখর আগরওয়াল। বয়স ৩৭। পুলিশ ইন্সপেক্টর সুবোধকুমার সিংহের হত্যায় অন্যতম অভিযুক্ত সে। বৃহস্পতিবার ভোরে বুলন্দশহর থেকে ৩৭ কিলোমিটার দূরে হাপুর শহর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সিয়ানায় বিজেপির যুব সংগঠন ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার সভাপতি শিখর। পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে বুলন্দশহরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অতুলকুমার শ্রীবাস্তব জানান, ‘‘এ দিন ভোরের দিকে গ্রেফতার করা হয় শিখর আগরওয়ালকে। সিয়ানা কোতয়ালি থানায় তার জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পরে তাকে স্থানীয় আদালতে তোলা হবে।’’
গোহত্যার গুজব ঘিরে গত ৩ ডিসেম্বর রণক্ষেত্রে পরিণত হয় উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহর। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃত্যু হয় সিয়ানা থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার সুবোধকুমার সিংহ এবং স্থানীয় যুবক সুমিতকুমারের। গোটা ঘটনায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের সরকার। যার পর ৩ জানুয়ারি গ্রেফতার করা হয় মূল অভিযুক্ত এবং সিয়ানায় বজরং দলের কোঅর্ডিনেটর যোগেশ রাজকে। সে-ই বিক্ষোভের মূল চক্রী বলে অভিযোগ। তার অভিযোগের ভিত্তিতে শুরুতে ৫ মুসলিম যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু প্রমাণের অভাবে দু’সপ্তাহ পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: সরলেন বিচারপতি ললিত, অযোধ্যা মামলা ফের পিছোল, শুনানি ২৯ জানুয়ারি
যোগেশের মতোই বিক্ষোভের পর থেকে গা ঢাকা দিয়ে ছিল শিখর আগরওয়াল। সেই অবস্থাতেই গত মাসে একাধিক ভিডিয়ো প্রকাশ করে তারা। তাতে হিংসার যাবতীয় দায় নিহত সুবোধ কুমার সিংহের উপরই চাপিয়ে দেয়। নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করে। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং মুসলিমদের প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আনে শিখর।
বুলন্দশহর কাণ্ডে সুবোধ কুমার সিংহ সহ পুলিশের খাতায় নাম উঠেছে মোট ৮৭ জনের। যার মধ্যে হিংসায় মদত জোগানোর অভিযোগ ২৭ জনের বিরুদ্ধে। এখনও পর্যন্ত ৩৬ জনকে গ্রেফতার করা গিয়েছে। ২৮ ডিসেম্বর প্রশান্ত নাট নামের এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। ইন্সপেক্টর সুবোধ সিংহকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল সে।
আরও পড়ুন: তদন্ত রিপোর্ট ‘গোপন’ রাখার চেষ্টা বিফলে, ২২ ভুয়ো সংঘর্ষে সুপ্রিম চাপে মোদী-শাহ
১ জানুয়ারি গ্রেফতার করা হয় কালুয়া নামের আর একজনকে। কুড়ুল নিয়ে সুবোধ সিংহের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সে। কেটে নিয়েছিল তাঁর হাতের আঙুল এবং আঘাত করেছিল মাথাতেও। মোবাইলে তোলা একটি ভিডিয়ো দেখে জনি নামের আরও একজনকে শনাক্ত করা হয়। নিহতের হাত থেকে রিভলভার কেড়ে নেয় সে। সেনাবাহিনীতে কর্মরত জিতেন্দ্র মালিককে গ্রেফতার করা হয় ৯ ডিসেম্বর। এই মুহূর্তে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছে সে। রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের সঙ্গে যুক্ত পবন কুমারকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।