অন্ধ্রপ্রদেশে আগুন লাগা সেই বাস। ছবি: পিটিআই।
বার বার ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করার ইতিহাস রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের দুর্ঘটনার কবলে পড়া বাসটির। তবে বাসটির অন্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় কাগজপত্র বৈধই ছিল। রোড ট্যাক্স থেকে শুরু করে ফিটনেস সার্টিফিকেট— ওই বাসের সবই নিয়ম মেনে করা হয়েছিল।
শুক্রবার ভোরে অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্নুলে যাত্রীবোঝাই বাসটির একটি বাইকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। সঙ্গে সঙ্গে বাসে আগুন ধরে যায়। আগুন লাগার ফলে বাতানুকূল ওই বাসে শর্ট সার্কিট হয়। তার ফলেই বাসের স্বয়ংক্রিয় দরজা খোলেনি। দরজা না-খোলায় অনেক যাত্রীই আটকে পড়েন। কেউ কেউ জানলা ভেঙে প্রাণ বাঁচাতে বাইরে ঝাঁপ দেন। এই অগ্নিকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ২০ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। প্রশ্ন উঠছে, বাসটির সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে।
জানা গিয়েছে, বাসটি ওড়িশার একটি বেসরকারি সংস্থার মালিকানাধীন। ২০১৮ সালে ২ মে বাসটি কেনা হয়। ওই বছরের ৮ অগস্ট দমন ও দিউতে বাসটি রেজিস্ট্রেশন করেন মালিক। এত দিন ওই রেজিস্ট্রেশনের ভিত্তিতেই চলছিল বাসটি। চলতি বছরের ২৯ এপ্রিলে ওড়িশার রায়াগড়াতে পুনরায় রেজিস্ট্রেশন করানো হয়। বাসটির কাছে বৈধ ‘ট্যুরিস্ট পারমিট’ ছিল। ২০৩০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত তার বৈধতা রয়েছে।
বাসটির রোড ট্যাক্স থেকে শুরু ফিটনেস সার্টিফিকেট— সবই নিয়মানুযায়ী যাচাই করা ছিল। তবে সব বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও বার বার ট্রাফিক আইন ভাঙার দীর্ঘ রেকর্ড রয়েছে। শুধুমাত্র তেলঙ্গানাতেই ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ১৬টি চালান কাটা হয়। সেই সব চালানের মোট অনাদায় অর্থ ২৩ হাজার টাকা!
জানা গিয়েছে, ওই বাসটি হায়দরাবাদ থেকে বেঙ্গালুরু যাচ্ছিল। তাতে মোট ৪০ জন যাত্রী ছিলেন। অন্ধ্রের কুর্নুল জেলার চিন্নাটেকুর গ্রামের কাছে ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়কে বাইকের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বাসটির। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, সংঘর্ষের পর বাইকটি বাসের নীচে আটকে যায়। ওই অবস্থায় কিছুটা দূর এগোনোর পরেই বাইরে বিস্ফোরণ হয়। আগুনের স্ফুলিঙ্গ গিয়ে পৌঁছোয় বাসের তেলের ট্যাঙ্কারে। তার পরেই বাসটিতে আগুন লেগে যায়। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের বক্তব্য, বাইকটি বাসের তেলের ট্যাঙ্কে ধাক্কা মেরেছিল। সংঘর্ষের অভিঘাতে তেলের ট্যাঙ্কের ঢাকনা খুলে যায়। তেলের ট্যাঙ্কে বিস্ফোরণের জেরে মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে বাসটিতে।