ভারতীয় রেলের ৫৪৩ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি। —ফাইল চিত্র।
তিন বছরে ৫৪৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে ভারতীয় রেলের। লোকসভায় অডিট রিপোর্ট দিয়ে এমনটাই দাবি করল কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (ক্যাগ)। রিপোর্টে ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত রেলের লাভ-ক্ষতির হিসাব খতিয়ে দেখেছে তারা। সেই রিপোর্ট গত সোমবার লোকসভায় জমা দেওয়া হয়। রিপোর্টে মোট ২৫টি ঘটনার কথা তুলে ধরেছে ক্যাগ, যেখানে রেলের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
মূলত বিভিন্ন জায়গা থেকে সম্পূর্ণ টাকা আদায় করতে না পারা, অবাঞ্ছিত খরচ, অব্যবস্থা এবং রাজস্ব ঘাটতির কারণেই রেলের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। ক্যাগের রিপোর্ট অনুযায়ী, রেলের বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্ন সময়ে নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। যে কারণে এই অবাঞ্ছিত খরচ বা রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল উত্তর (নর্দার্ন) রেলের ঘাটতি। পাঁচটি সরকারপোষিত স্কুলের কাছ থেকে জমির লাইসেন্স বাবদ ১৪৮.৬১ কোটি টাকা তারা আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে। জমির বাজারমূল্যের ৬ শতাংশ আদায় করার স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল উত্তর রেলকে। ক্যাগের রিপোর্টে রেলের আদায় করতে না-পারা টাকার মধ্যে সবচেয়ে বড় অঙ্ক এটাই।
ন’টি জ়োনাল রেলের বিরুদ্ধেও টাকা আদায় করতে না-পারার অভিযোগ রয়েছে ক্যাগের রিপোর্টে। দক্ষিণ-পূর্ব, দক্ষিণ-পশ্চিম, উত্তর-মধ্য, পূর্ব উপকূল, পূর্ব, উত্তর-পশ্চিম, দক্ষিণ-পূর্ব-মধ্য, পশ্চিম-মধ্য এবং মধ্য রেলওয়ে একত্রে ৫৫.৫১ কোটি টাকা উদ্ধার করতে পারেনি। ঠিকাদারদের কাছ থেকে জেলা খনিজ ফাউন্ডেশনের (ডিএমএফ) ৫৫.৫১ কোটি টাকা আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে। ডিএমএফ-এর এই টাকা রেলের খনি সংক্রান্ত কাজের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা এলাকার স্বার্থ সুরক্ষিত করার জন্য ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া, পূর্ব-মধ্য রেলের গাফিলতিতে আরও ৫০.৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে ভারতীয় রেলের।
ক্যাগের রিপোর্ট অনুযায়ী, দক্ষিণ (সাদার্ন) রেল এবং ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ না করে এবং যথেষ্ট প্রযুক্তিগত মূল্যায়ন না করে নীলগিরি মাউন্টেন রেলের জন্য ২৮টি মিটারগেজ কামরা তৈরি করেছে। এতে খরচ হয়েছে ২৭.৯১ কোটি টাকা। দক্ষিণ-মধ্য রেলের বিরুদ্ধে আরও ২৩.১৬ কোটি টাকা খরচের অভিযোগ রয়েছে, যা এড়ানো যেত। ওয়েস্টার্ন ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডরে ১৫.৬২ কোটি টাকা বাড়তি খরচ করেছে মধ্য রেল। খরচ সংক্রান্ত নির্দেশ মানতে তারা ব্যর্থ হয়েছে।