Punjab Bribe Case

কার থেকে কত টাকা ঘুষ, লাল ডায়েরিতে লিখে রাখতেন পঞ্জাবের ধৃত ডিআইজি! বহু ব্যবসায়ীর নাম পেল সিবিআই

পঞ্জাবের ফতেহগড় সাহিবের ব্যবসায়ী আকাশ বাট্টার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পঞ্জাবের ডিআইজি হরচরণের কীর্তি ফাঁস করল সিবিআই। ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। বাঁচতে গেলে আট লক্ষ ঘুষের দাবিও করা হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:২৯
Share:

পঞ্জাবের ধৃত ডিআইজি হরচরণ সিংহ ভুল্লার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

পঞ্জাবের ডিজিপি হরচরণ সিংহ ভুল্লারের বাড়ি থেকে একটি লাল ডায়েরি উদ্ধার করল সিবিআই। কোটি কোটি নগদ, সোনার গয়না, দামি দামি ঘড়ি কিংবা বিলাসবহুল গাড়ির থেকেও ঘুষ মামলার তদন্তে ওই লাল ডায়েরিই এখন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ওই ডায়েরির পাতায় পাতায় রহস্য! লেখা রয়েছে অনেক ব্যবসায়ীর নামধাম-সহ নানান ব্যক্তিগত তথ্য। শুধু তা-ই নয়, নামের পাশে লেখা রয়েছে কিছু টাকার অঙ্কও! অন্য দিকে, শুক্রবার হরচরণকে আদালতে হাজির করানো হলে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

Advertisement

পঞ্জাবের রোপার রেঞ্জের ডিআইজি হরচরণকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। কিন্তু তাঁর বাড়িতে এখনও তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছেন গোয়েন্দারা। এখনও পর্যন্ত ডিআইজি-র বাড়ি থেকে পাঁচ কোটি নগদ উদ্ধার হয়েছে। তবে টাকার পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। সূত্রের দাবি, এখনও টাকা গোনার কাজ চলছে। প্রশ্ন, এত নগদ কী ভাবে এল হরচরণের কাছে? সিবিআই সূত্রে দাবি, সব টাকাই ঘুষের!

পঞ্জাবের ফতেহগড় সাহিবের ব্যবসায়ী আকাশ বাট্টার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে হরচরণের কীর্তি ফাঁস করল সিবিআই। ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। বাঁচতে গেলে আট লক্ষ টাকা ঘুষের দাবিও করা হয়। সেই ঘুষ চাওয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করে সিবিআই। তাদের পাতা ফাঁদে পা দেন হরচরণ।

Advertisement

ঘুষের টাকা লেনদেন সরাসরি করতেন না হরচরণ। কৃষ্ণানু নামে এক যুবক মধ্যস্থতার কাজ করতেন। আকাশের দাবি, আট লক্ষ টাকা ওই কৃষ্ণানুর কাছে দেওয়ার নির্দেশ ছিল। সিবিআই আধিকারিকেরা টাকা দেওয়ার ‘টোপ’ দিয়ে ওই কৃষ্ণানুকে ডেকে পাঠান। তার পরেই হাতেনাতে গ্রেফতার করেন তাঁকে। তার পরে তাঁর মোবাইল থেকেই হরচরণকে ফোন করা হয়। সেই হোয়াট্‌সঅ্যাপ কলই ধরিয়ে দেয় হরচরণকে। ফোনের ওপার থেকে কৃষ্ণানুকে টাকা সংগ্রহের নির্দেশ দেন তিনি। আট লক্ষের কম থাকলেও তা আকাশের থেকে নিয়ে নিতে বলেই ফেঁসে যান হরচরণ।

হোয়াট্‌সঅ্যাপ কল এবং কৃষ্ণানুর বয়ানের সূত্র ধরে সিবিআইয়ের একটি দল মোহালিতে হরচরণের অফিসে হানা দেয়। সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারির পর বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান শুরু করে সিবিআই। তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালানোর সময় ওই লাল ডায়েরির খোঁজ পান গোয়েন্দারা।

কী আছে ওই ডায়েরিতে? মোহালি, রোপার, বার্নালা এবং পটীয়ালার বেশ কয়েক জন প্রভাবশালী শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, প্রোমোটারের নামের তালিকা রয়েছে ডায়েরির পাতায়। শুধু নাম নয়, সংশ্লিষ্ট ওই শিল্পপতি, ব্যবসায়ীদের বাড়ির ঠিকানা, মোবাইল নম্বর-সহ আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও ওই ডায়েরিতে উল্লেখ রয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে দাবি। ওই ডায়েরিতে নাম ছিল আকাশেরও। তদন্তকারী সূত্রে দাবি, ওই ডায়েরিতে নাম থাকা ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, প্রোমোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁদের সঙ্গে হরচরণের যোগের সূত্র খোঁজার চেষ্টা করবেন গোয়েন্দারা।

পাঁচ কোটি নগদ ছাড়াও দামি দামি ঘড়ি, গ্যারাজে অডি, মার্সিডিজ় পাওয়া গিয়েছে হরচরণের বাড়ি থেকে। শুধু তা-ই নয়, ব্যাঙ্কের ভল্টের একটি চাবিও বাড়ি থেকে পেয়েছেন গোয়েন্দারা। সেই ভল্টে কী কী আছে, তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement