Pradhan Mantri Garib Kalyan Yojana

বৃদ্ধি ধাক্কা খেতেই কি মুখে গরিবের কথা, প্রশ্ন মোদীকে

বুধবার ভারত-মার্কিন বাণিজ্য পরিষদের সামনে ভিডিয়ো বক্তৃতায় মোদী বলেন, করোনার বিশ্ব জোড়া প্রকোপ থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে যাবতীয় চিন্তা-ভাবনা হওয়া উচিত মানুষ-কেন্দ্রিক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২০ ০৪:৪৫
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।ছবি পিটিআই।

বৃদ্ধির হার গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু করোনা-উত্তর পৃথিবীর আর্থিক নীতি তৈরিতে পাখির চোখ হওয়া উচিত আমজনতার জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন। মার্কিন শিল্পমহলের সামনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই বক্তব্য নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। তাঁদের জিজ্ঞাসা, বৃদ্ধির হার গোত্তা খাওয়ার পরেই কি এই বিলম্বিত বোধোদয়? আর যদি তা-ও হয়, তবে এর প্রতিফলন কেন্দ্রের আর্থিক নীতিতে কোথায়?

Advertisement

বুধবার ভারত-মার্কিন বাণিজ্য পরিষদের সামনে ভিডিয়ো বক্তৃতায় মোদী বলেন, করোনার বিশ্ব জোড়া প্রকোপ থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে যাবতীয় চিন্তা-ভাবনা হওয়া উচিত মানুষ-কেন্দ্রিক। অর্থনীতির চাকা গড়াতে বৃদ্ধি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু তা বলে যাবতীয় আর্থিক নীতি শুধু তাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হওয়া ঠিক নয়। কারণ, সাধারণ মানুষের ‘সহজে বাঁচা’, ‘সহজে ব্যবসা করার’ মতোই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রধানমন্ত্রী যে কথা বলেছেন, তা জোরের সঙ্গে বলেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ। শুধু বৃদ্ধিই যে সব নয়, আর্থিক বৈষম্য আর তার জেরে ভোগা সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘব করতে সারা বিশ্বে সম্পদের এতখানি অসম বণ্টন বন্ধ হওয়া যে জরুরি, তা বার বার মনে করিয়ে দিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ জোসেফ স্টিগলিৎজ়, অমর্ত্য সেন, হালে এ বিষয়ে কাজ করে সাড়া ফেলে দেওয়া থমাস পিকেটিরা।

Advertisement

কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসা ইস্তক এই বৃদ্ধির হারকেই তো দেশের অর্থনীতির স্বাস্থ্যের আয়না হিসেবে তুলে ধরেছে মোদী সরকার! তা ৭ শতাংশের আশপাশে থাকা পর্যন্তও ‘বুক বাজিয়ে’ দ্রুততম বৃদ্ধির দেশ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে ভারতকে। মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে এ বিষয়ে চিনকে টেক্কা দেওয়ার কথা। এমনকি, বেকারত্বের চড়া হার নিয়ে প্রশ্ন ধেয়ে এলেও, এক সময়ে মোদীর মন্ত্রীরা পাল্টা প্রশ্ন ছুড়েছেন, ৭% বৃদ্ধির দেশে কাজের সুযোগ তৈরি হচ্ছে না, এটা বিশ্বাসযোগ্য? কংগ্রেস, সিপিএম-সহ বিরোধীদের অভিযোগ, অতিমারির আক্রমণের আগে থেকেই দেশের অর্থনীতির পালে বৃদ্ধির হাওয়া সুবিধার নয়। করোনার কামড়ে তো উল্টে অর্থনীতি প্রায় ৫% সঙ্কুচিত হওয়ার আশঙ্কা। সেই কারণেই কি বৃদ্ধিকে আর একমাত্র মাপকাঠি ভাবছেন না মোদী?

একাধিক কর্মী সংগঠনের আবার জিজ্ঞাসা, প্রধানমন্ত্রী মুখে মানুষ-কেন্দ্রিক আর্থিক নীতির কথা বললেও, সরকারের কাজে তার প্রতিফলন কোথায়? কেন তা হলে করোনায় বিপর্যস্ত দরিদ্রদের টিকে থাকার নগদটুকু দিতে সরকারের এখনও এত কার্পণ্য? কাজ হারানো কর্মী, প্রবল সমস্যায় পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি সহমর্মিতাই বা কেন্দ্রের কোথায়?

মোদী সরকারের অবশ্য দাবি, মূলত এঁদের কথা মাথায় রেখেই প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনার সূচনা। এই কঠিন সময়ে তাঁরা যাতে অন্তত ঘরের কাছে কাজ পান, তার জন্যই ওই উদ্যোগ। এ দিনও নেট মারফত মণিপুরে জল-প্রকল্পের শিলান্যাস করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দাবি, “ভাল ভাবে এবং সহজে বাঁচা গরিবের অধিকার।” তাঁর দাবি, এই লক্ষ্যে তাঁর সরকার গত ছ’বছর লাগাতার চেষ্টা করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন