প্রতীকী ছবি।
সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে বা মোবাইলের সিম চালু রাখতে আধার বাধ্যতামূলক করা যাবে না।
সুপ্রিম কোর্টের সেই রায়কে এড়িয়ে ‘স্বেচ্ছায়’ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও মোবাইলের নম্বরের সঙ্গে আধার নম্বরের সংযুক্তিকরণ ব্যবস্থা চালু রাখতে লোকসভায় বিল পেশ করল নরেন্দ্র মোদী সরকার। তথ্যপ্রযুক্তি ও আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের দাবি, কেউ যদি স্বেচ্ছায় আধারের সাহায্যেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বা মোবাইলের সিমের ক্ষেত্রে নিজের পরিচয়ের প্রমাণ দিতে চান, তা হলে তা করতে পারবেন। সেই জন্যই এই ব্যবস্থা।
কংগ্রেসের শশী তারুর, তৃণমূল কংগ্রেসের সৌগত রায় ও আরএসপি-র এন কে প্রেমচন্দ্রন এই বিল পেশের বিরোধিতা করে অভিযোগ তোলেন, এই বিল সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরোধী। তাতে অবশ্য সরকার কান দেয়নি। মোদী সরকার এই বিল এনে মূলত তিনটি আইনে সংশোধন করতে চাইছে। আধার আইন, টেলিগ্রাফ আইন ও আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইন। কোনও বেসরকারি সংস্থা আধার আইন ভাঙলে বা আধার নম্বরের অপব্যবহার করলে বিলে এক কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানার নিদান রয়েছে। আধারের তথ্য চুরি রুখতে ১২ সংখ্যার আধার নম্বরের পাশাপাশি একটি ‘ভার্চুয়াল আইডি’ চালু করেছেন আধার কর্তৃপক্ষ। তাকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে এই বিলে।
সরকারি সূত্রের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও মোবাইল নম্বরের সঙ্গে আধার সংযুক্তিকরণ খারিজ করে দেওয়ায়, ব্যাঙ্ক ও মোবাইল পরিষেবা সংস্থাগুলি বিপাকে পড়েছে। কারণ কোটি কোটি মানুষের আধার নম্বর নেওয়া হয়ে গিয়েছে। এদিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী নাগরিকদের আধার রাখাও বেআইনি। আধার নম্বর মুছে দেওয়া হয়েছে দাবি করলে তা যাচাই করার প্রশ্ন উঠবে। ব্যাঙ্ক ও মোবাইল পরিষেবা সংস্থাগুলি তাই সরকারের কাছে দরবার করেছিল। স্বেচ্ছায় আধারের ব্যবহার চালু রাখতেই তাই বিল আনতে হল।
কংগ্রেসের শশী তারুরের যুক্তি, এই বিলের আগে তথ্য সুরক্ষা আইন প্রয়োজন। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ইন্টারনেট ফ্রিডমের অধিকর্তা অপার গুপ্ত বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট বেসরকারি সংস্থার আধার ব্যবহার খারিজ করে দিয়েছিল। তা আবার ফিরে আসছে। সরকার তথ্য সুরক্ষার পক্ষে কোনও দিশা দেখাতে পারছে না।’’