‘প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মাননিধি’ প্রকল্পে ৩১ লক্ষ উপভোক্তাকে নিয়ে সন্দেহ কেন্দ্রের। —প্রতীকী চিত্র।
সরকারের চোখে ধুলো দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পের টাকা নিয়ে যাচ্ছেন অনেকে? সম্প্রতি তথ্য যাচাইয়ের সময়ে এমনই সন্দেহ জেগেছে কেন্দ্রের। ‘প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মাননিধি’ প্রকল্পের আওতায় ৩১ লক্ষেরও বেশি উপভোক্তাকে ‘সন্দেহজনক’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। নিয়ম অনুসারে, কৃষক পরিবারপিছু এক জনের এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার কথা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কোথাও কোথাও স্বামী-স্ত্রী উভয়েই প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন বলে সন্দেহ কেন্দ্রের। সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ অনুসারে, কেন্দ্রীয় কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ মন্ত্রক তথ্যযাচাই করার সময়েই এই সন্দেহজনক উপভোক্তাদের বিষয়টি নজরে আসে।
সূত্র মারফত ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ৩১ লক্ষের কিছু বেশি উপভোক্তাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তার মধ্যে ১৯ লক্ষের কিছু বেশি উপভোক্তার তথ্য ইতিমধ্যে যাচাই করে দেখা হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, ১৭ লক্ষ ৮৭ হাজার (প্রায় ৯৪ শতাংশ) উপভোক্তাই স্বামী-স্ত্রী। ওই সূত্র আরও জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রক থেকে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিতে এ বিষয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে ওই ‘সন্দেহভাজন’ উপভোক্তাদের তথ্য যাচাই করতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে।
প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মাননিধির আওতায় কৃষক পরিবারগুলি বছরে ৬ হাজার টাকা করে আর্থিক সুবিধা পায়। বছরে তিনটি কিস্তিতে (২০০০ টাকা করে) কৃষক পরিবারগুলিকে এই টাকা দেয় কেন্দ্র। সরকারি উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এই টাকা পাঠানো হয়। প্রকল্পের নিয়ম অনুসারে, কৃষক পরিবার বলতে স্বামী-স্ত্রী এবং তাঁদের নাবালক সন্তানকে বোঝায়। তথ্য খতিয়ে দেখতে গিয়ে উঠে এসেছে, শুধু স্বামী-স্ত্রী উভয়ের নামেই নয়, কখনও কখনও নাবালক সন্তানের নামও জুড়ে গিয়েছে উপভোক্তাদের তালিকায়। সূত্রের খবর, তথ্যানুসন্ধানের সময়ে এমন প্রায় ১ লক্ষ ৭৬ হাজার নাম পাওয়া গিয়েছে। ওই উপভোক্তাদের তথ্য যাচাই করতে শুরু করেছে কেন্দ্র।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের ঠিক আগে ফেব্রুয়ারিতে ‘প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মাননিধি’ প্রকল্প চালু করে কেন্দ্র। চলতি অর্থবর্ষের বাজেটে এই প্রকল্পের জন্য ৬৩,৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে, কেন্দ্রের এই প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গে কার্যকর হয়নি। রাজ্যে কৃষকদের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নিজস্ব ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্প রয়েছে।