সাংহাই বিমানবন্দরে ভারতীয় তরুণীকে হেনস্থার অভিযোগ অস্বীকার চিনের। — ফাইল চিত্র।
চিনের সাংহাই বিমানবন্দরে ব্রিটেনে বসবাসকারী ভারতীয় তরুণীকে হেনস্থা করার অভিযোগ অস্বীকার করল বেজিং। অভিযোগ উঠেছিল, সাংহাই বিমানবন্দরে চিনের অভিবাসন দফতরের আধিকারিকেরা ওই তরুণীকে বলেন, “অরুণাচল প্রদেশ চিনের অংশ।” হেনস্থার অভিযোগ অস্বীকার করলেও অরুণাচলের উপর তাদের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছে চিনের বিদেশ মন্ত্রক।
গত শুক্রবার লন্ডন থেকে সাংহাই হয়ে জাপান যাচ্ছিলেন পেমা নামে ওই তরুণী। লন্ডন থেকে সাংহাই পৌঁছে সেখান থেকে অন্য বিমান ধরে জাপানে পৌঁছোনোর কথা ছিল তাঁর। কিন্তু সাংহাই বিমানবন্দরে তাঁকে আটকে দেওয়া হয়। তাঁর অভিযোগ, অভিবাসন দফতরের আধিকারিকদের কাছে পাসপোর্ট জমা দেওয়ার পরেও দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় তাঁকে। তার পর হঠাৎ এক আধিকারিক এসে তাঁকে ‘ভারত-ভারত’ বলে তাঁর নাম ধরে ডাকেন। পরে অন্য যাত্রীদের থেকে তাঁকে আলাদা করে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ ওই তরুণীর। তার পরেই না কি তাঁকে বলা হয়, ভারত অরুণাচলের অংশ। তাই তাঁর পাসপোর্ট অবৈধ!
বিষয়টি নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিও দেন পেমা। বিষয়টি নিয়ে নয়াদিল্লিকে বেজিঙের সঙ্গে কথা বলার অনুরোধও করেছেন তিনি। প্রকাশ্যে আসার পরেই ওই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া দিল চিনের বিদেশ মন্ত্রক। তাদের মুখপাত্র মাও নিং জানান, কোনও ধরনের হেনস্থা করা হয়নি ওই তরুণীকে। তাঁর মতে, সীমান্তকর্মীরা ‘আইন এবং বিধি’ মেনে কাজ করেছেন। বিমান সংস্থা তাঁকে জল, খাবারও দিয়েছে।
তার পরেই মাও বলেন, ‘‘জাংনান (অরুণাচলকে এই নামেই ডাকে চিন) আমাদের দেশেরই অংশ। চিন কখনই ভারতের অবৈধ ভাবে দাবি করা অরুণাচল প্রদেশকে মানে না।’’ উল্লেখ্য, অরুণাচল তাদের অংশ বলে বহু দিন ধরেই দাবি করে আসছে চিন। ভারত এবং চিনের মধ্যে সংঘাতের অন্যতম কারণই হল অরুণাচল। চিন প্রায়শই উত্তর-পূর্ব ভারতের এই রাজ্যের বেশ কয়েকটি স্থানের নাম পরিবর্তন করে মানচিত্র প্রকাশ করে থাকে।
অরুণাচলের ভৌগোলিক অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারত এবং চিনের সীমান্ত-বিবাদের অন্যতম কারণই অরুণাচলের উপর বেজিঙের দাবি। ভারতের এই রাজ্যটির সঙ্গে চিনের তিব্বতের সীমান্ত রয়েছে। বেজিং বরাবর দাবি করে, অরুণাচল ঐতিহাসিক ভাবে চিনেরই অংশ। যদিও ভারত সেই দাবির বিরোধিতা করে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে অরুণাচল নিয়ে আঞ্চলিক বিরোধের পাশাপাশি এই রাজ্যের জলসম্পদ ব্যবহার নিয়েও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।