ঋণের নামে অনলাইন প্রতারণাচক্রের বেশির ভাগেই মাথায় রয়েছে চিনা সাইবার দুষ্কৃতীরা, রিপোর্টে দাবি ইডির। —প্রতীকী ছবি।
‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ করে সাধারণ মানুষকে প্রতারণার অভিযোগ নিয়ে সম্প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। গোটা দেশে ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ সংক্রান্ত যত অভিযোগ রয়েছে, সব সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করানোর কথা ভাবছে শীর্ষ আদালত। এরই মধ্যে সাইবার প্রতারণা সংক্রান্ত নতুন তথ্য উঠে এল অপর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ‘এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট’ (ইডি)-এর রিপোর্টে। ঋণ দেওয়ার অনলাইন অ্যাপ এবং ক্রিপ্টোকারেন্সিতে লগ্নির নামে প্রতারণাচক্রগুলির মাথা মূলত চিনা প্রতারকেরা।
গত কয়েক বছর ধরে অনলাইনে ঋণের নামে প্রতারণার অভিযোগের তদন্ত চালাচ্ছে ইডি। সেই সূত্র ধরেই ‘লোনপ্রো’, ‘ফাস্টক্রেডিট’, ‘স্মার্টরুপি’-সহ আরও কিছু অ্যাপের ভূমিকা খতিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা। ইডির তদন্তে উঠে এসেছে, দেশের ২০টিরও বেশি রাজ্যে কয়েক হাজার মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ফাঁদে ফেলা হয়েছে। এই ঋণ শোধ করার জন্যও ‘কড়া নিয়ম’ রয়েছে অ্যাপগুলির। অনেক সময় না বুঝেই ফাঁদে পা দেন সাধারণ মানুষেরা। ফলে ঋণ শোধ করতে না-পেরে অনেকে আত্মহত্যার পথও বেছে নিয়েছেন অতীতে।
সংবাদমাধ্যম ‘টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’র প্রতিবেদন অনুসারে, এই ধরনের অ্যাপগুলির মাধ্যমে প্রায় ২৮,০০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে ইডির তদন্তে উঠে এসেছে। এর মধ্যে অনেকগুলিতেই চিনা প্রতারকদের যোগ রয়েছে বলে সন্দেহ করছেন তদন্তকারীরা। ইডির রিপোর্টের ভিত্তিতে ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, তাৎক্ষণিক ঋণ দেওয়ার এই অ্যাপগুলি বেশির ভাগই বেআইনি।
সাত থেকে ১৫ দিনের জন্য ঋণ দেওয়া হয় অ্যাপগুলির মাধ্যমে। তার জন্য ‘প্ল্যাটফর্ম ফি’ (ওই অনলাইন অ্যাপ ব্যবহার করে ঋণ নেওয়ার জন্য মূল্য) বাবদ মোট ঋণের ৩০-৪০ শতাংশ কেটে নেওয়া হয়। যাঁরা সেই টাকা দিতে পারেন না, তাঁদের বিভিন্ন ভাবে চাপ দেওয়া হয়। এমনকি তাঁদের ব্যক্তিগত তথ্যও হাতিয়ে নিয়ে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
‘এইচপিজ়েড টোকেন’ নামে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগের এক অনলাইন সংস্থার মাধ্যমেও বহু মানুষকে প্রতারিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে এসেছে। ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগের নামে প্রতারণা করে অন্তত ২,২০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার তদন্তে এখনও পর্যন্ত ১০ জন চিনা নাগরিকের যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। ‘ফ্রিজ়’ করা হয়েছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা।