গায়ে আগুন নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা নির্যাতিতার। —প্রতীকী চিত্র।
কলেজের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ জানিয়েছিলেন। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি তুলছিলেন ছাত্রী। কিন্তু তা না-হওয়ায় কলেজ ক্যাম্পাসেই নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন নির্যাতিতা। ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার বালেশ্বরের এক কলেজে। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় ওই ছাত্রী বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন ভুবনেশ্বর এমসে। তাঁর শরীরের ৯০ শতাংশই পুড়ে গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, নির্যাতিতা ছাত্রী ওই কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া। কলেজের এক বিভাগীয় প্রধান তাঁকে যৌন হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ। গত ৩০ জুন কলেজের অভ্যন্তরীণ অভিযোগগ্রহণ কমিটি (আইসিসি)-তে ওই ঘটনার কথা জানান নির্যাতিতা। কিন্তু, তার পরেও ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছিল না বলে অভিযোগ। এই নিয়ে এক সপ্তাহ ধরে কলেজ চত্বরেই প্রতিবাদ জানান তিনি। শেষে শনিবার ক্যাম্পাসেই নিজের গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই তরুণী।
নিজের গায়ে আগুন ধরানোর আগে শনিবার কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গেও দেখা করতে যান তিনি। সেখান থেকে বেরিয়ে কিছু ক্ষণের মধ্যেই ক্যাম্পাসে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন নির্যাতিতা। ছাত্রীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন কলেজেরই এক ছাত্র। নির্যাতিতার গায়ের আগুন নেভাতে গিয়ে তিনিও দগ্ধ হয়েছেন। ঘটনার পরে তড়িঘড়ি দু’জনকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, নির্যাতিতার শারীরিক অবস্থান অবনতি হওয়ায় তাঁকে ভুবনেশ্বর এমসে স্থানান্তর করা হয়। আপাতত সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
ঘটনার পরে কলেজের অধ্যক্ষ জানান, শিক্ষকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের দাবিতে ওই ছাত্রী তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তখন ওই ছাত্রীকে উদ্বিগ্ন দেখাচ্ছিল। তিনি ছাত্রীকে বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। শনিবারের ওইঘটনার পরে অভিযুক্ত অধ্যাপককে ইতিমধ্যে আটক করেছে পুলিশ। বালেশ্বরের পুলিশ সুপার রাজ প্রসাদ এবং ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে তদন্তের জন্য। বালেশ্বরের বিধায়ক মানস দত্ত নির্যাতিতাকে দেখতে হাসপাতালে যান। তিনি জানান, তরুণীর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। আপাতত তাঁর জীবন বাঁচানোই প্রধান লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক।