Congress

SSC recruitment scam: পার্থ-কাণ্ডে তৃণমূলকে তির কংগ্রেসেরও

পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠের বাড়ি থেকে ২১ কোটি টাকা নগদ উদ্ধারের পরে এ বার জাতীয় কংগ্রেসে রাহুল গান্ধীর ঘনিষ্ঠ নেতা তৃণমূলকে নিশানা করলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২২ ০৭:১৫
Share:

এআইসিসি-র নেতা মানিকম টেগোর

মুখে কিছু না বললেও বিরক্তি বাড়ছিল। সনিয়া গান্ধীকে ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের প্রতিবাদে কংগ্রেসের সঙ্গে সব বিরোধী দল যোগ দিলেও তৃণমূল তা থেকে দূরত্ব রাখায় এ বার সংযমের বাঁধ ভাঙল। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠের বাড়ি থেকে ২১ কোটি টাকা নগদ উদ্ধারের পরে এ বার জাতীয় কংগ্রেসে রাহুল গান্ধীর ঘনিষ্ঠ নেতা তৃণমূলকে নিশানা করলেন।

Advertisement

এআইসিসি-র নেতা মানিকম টেগোর আজ প্রশ্ন তুলেছেন, যে দল নিজেদের তৃণমূল স্তরের রাজনৈতিক দল বলে দাবি করে, তার মন্ত্রী শিক্ষকদের থেকে ২০ কোটি টাকা আদায় করেছে! তৃণমূলকে ‘গ্রস রুট পার্টি’ বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি। কেন তৃণমূল নরেন্দ্র মোদী সরকারের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ থেকে দূরত্ব রেখে চলছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মানিকম।

উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই করতে বিরোধীদের বৈঠক তৃণমূল এড়িয়ে গিয়েছিল। তারপরে ভোটদানে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব কংগ্রেসের বিরুদ্ধেই আলোচনা না করে প্রার্থী বাছাই করার অভিযোগ তোলে। তা সত্ত্বেও জাতীয় কংগ্রেসের কোনও নেতা তৃণমূলের বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে অধীর চৌধুরী তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের সমালোচনা করেছেন। জাতীয় কংগ্রেসের নেতারা শুধু তৃণমূলকে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটদানে বিরত না থাকার আর্জি জানিয়েই থেমে গিয়েছিলেন। কংগ্রেস নেতৃত্বের মধ্যে অবশ্য বিরক্তি তৈরি হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় সনিয়া গান্ধীকে ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের দিন কংগ্রেসের ডাকে ১২টি বিরোধী দল মিলে বিবৃতি দিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে রাজনৈতিক স্বার্থে কাজে লাগানোর অভিযোগ তোলে। তৃণমূল তাতে যোগ দেয়নি।

Advertisement

আজ মানিকম টেগোর তৃণমূল কংগ্রেসকে ‘গ্রস রুট পার্টি’ বলে কটাক্ষ করেছেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘গ্রস রুট পার্টির মন্ত্রীর ২০ কোটি টাকা নগদ শিক্ষকদের থেকে আদায় করা!’’ তামিলনাড়ুর সাংসদ মানিকম লোকসভায় কংগ্রেসের সচেতক। এআইসিসি-তে তেলঙ্গানার ভারপ্রাপ্ত নেতা। কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির স্থায়ী আমন্ত্রিত সদস্য। গত এক সপ্তাহ সংসদ চত্বরে গান্ধীমূর্তির সামনে কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলি মূল্যবৃদ্ধি, খাদ্যপণ্যে জিএসটি-র বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। কিন্তু তৃণমূল তাতে যোগ দেয়নি। আজ মানিকম টেগোর তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, ‘‘হঠাৎ কেন গ্রস রুট পার্টিকে নরেন্দ্র বাবা সরকারের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলির লড়াইয়ে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না? দার্জিলিঙে চুক্তি হয়ে গিয়েছে!’’

মানিকম দার্জিলিঙের রাজভবনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল ও উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী জগদীপ ধনখড় ও অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার বৈঠকের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। এর আগে অধীর চৌধুরীও ওই বৈঠককে ‘দার্জিলিং চুক্তি’ বলে আখ্যা দিয়ে অভিযোগ তুলেছিলেন, নরেন্দ্র মোদী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে গোপন বোঝাপড়া রয়েছে। সেই কারণেই তিনি উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধীদের প্রার্থীকে সমর্থন করছেন না। সনিয়া গান্ধীকে ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের প্রতিবাদে যোগ দেননি।

কংগ্রেস নেতারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, সনিয়া গান্ধী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থী নিয়ে সকলের সঙ্গে আলোচনা করার পরেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আচমকা নিজে চিঠি লিখে সবাইকে বৈঠকের আমন্ত্রণ জানান। এই অসৌজন্য মেনে নিয়েও কংগ্রেসের নেতারা মমতার বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু তৃণমূলের নেতারা দিল্লিতে থেকেও উপরাষ্ট্রপতি নিয়ে কংগ্রেসের ডাকা বৈঠকে যোগ দেননি। অতীতে যখন পেগাসাস স্পাইওয়্যার কাজে লাগিয়ে রাহুল গান্ধী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মোবাইলে আড়ি পাতার অভিযোগ উঠেছিল, সে সময়ে কংগ্রেস অভিষেকের ছবি-সহ টুইট করে এর প্রতিবাদ করেছিল। অথচ অভিষেকের ইডি-তে জিজ্ঞাসাবাদের পরে তিনি বিজেপির বদলে কংগ্রেসকেই নিশানা করেন। এর পরে তৃণমূল গোয়াতে গিয়ে কংগ্রেসের ভোটে ভাঙন ধরিয়েছে।

আজ লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী দাবি করেছেন, সিবিআই-ইডি থেকে বাঁচতে তৃণমূলের বহু নেতানেত্রী বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। দিদির ঘরের লোকও যোগাযোগ করছেন। সমস্ত দফতরে চুরি হয়েছে। চুনোপুঁটিরা ধরা পড়ছে। রুই-কাতলা ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ঠিকমতো তদন্ত হলে দিদির পরিবারে তদন্ত পৌঁছবে। দিদি পার্থকে বলি করে দেবেন, সন্দেহ নেই। সিঙ্গুর দিবসের মঞ্চে দিদিই পার্থকে বলেছিলেন, ৬৮ হাজারচাকরি দিচ্ছেন তো! তার পরেই চুরি শুরু হয়ে গেল। দিদির পরিবারের লোকেরা, ভাইপো বুদ্ধিমান। তিনি যাদের কাছে টাকা রেখেছেন, তাদের প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপে পাঠিয়ে দিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন