ছবি: সংগৃহীত।
পাঁচতারা হোটেলের সবুজ লনে ব্যাট হাতে ক্রিকেট খেলছেন রাজস্থানের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী সুভাষ গর্গ। এখন মাঝে মাঝে ফুটবল খেলেও তিনি সময় কাটান। অথচ করোনা-আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গের থেকে এগিয়ে রাজস্থান। করোনা-মোকাবিলার চেয়েও মরু রাজ্যে কংগ্রেসের বড় মাথাব্যথা দলীয় বিধায়কদের একজোট রাখা। তাই শাসকদলের মন্ত্রী থেকে সমস্ত বিধায়ক আপাতত জয়পুরের পাঁচতারা হোটেলে। কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি দল ভাঙাতে চাইছে।
১৯ জুন রাজ্যসভার ভোট। তাই প্রথমে কংগ্রেসের বিধায়কদের দিল্লি-জয়পুর হাইওয়েতে প্রাসাদোপম রিসর্টে তোলা হয়েছিল। পরে জয়পুরের জে ডব্লিউ ম্যারিয়টে। ১৯ জুন পর্যন্ত বিধায়কেরা সেখানেই থাকবেন। বিধায়কদের হোটেল-বন্দি করায় প্রদেশ কংগ্রেসের একাংশ অবশ্য অসন্তুষ্ট।
রাজস্থানে তিনটি আসনে রাজ্যসভার ভোট। সব ঠিক থাকলে দু’টিতে কংগ্রেস, একটিতে বিজেপি জিতবে। কিন্তু বিজেপি দু’জন প্রার্থী দিয়েছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, বিধায়ক কেনার খেলায় নেমেছে বিজেপি। যদিও গেরুয়া শিবির বলছে, এ সব কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব! আজ বিজেপি নিজেদের বিধায়কদের জয়পুরের একটি পাঁচতারা হোটেলে নিয়ে গিয়েছে। কংগ্রেস পাল্টা বিজেপি বিধায়কদের ভাঙিয়ে নেয়, সেই ভয়? বিজেপির রাজ্য সভাপতি সতীশ পুনিয়ার জবাব, ‘‘এ সব ঠিক করাই ছিল। রাজ্যসভার নির্বাচনে কী ভাবে ভোট দিতে হয়, তা নিয়ে বিধায়কদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কেন্দ্র ধরে কাজের পর্যালোচনাও হবে।’’
এ জন্য হোটেলে ‘রাজনৈতিক কোয়রান্টাইন’-এর কী দরকার? কংগ্রেস অবশ্য এ প্রশ্ন তোলেনি। কারণ, দলের অন্দরেও এই প্রশ্ন উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের সঙ্গে কংগ্রেসের তরুণ ব্রিগেডের উপমুখ্যমন্ত্রী সচিন পাইলটের সম্পর্ক সুবিদিত। বিজেপির ভয়ে দলীয় বিধায়কদের আদৌ হোটেল-রিসর্টে তোলা উচিত ছিল কি না, তা নিয়েও শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে পাইলট প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতিও। তাঁর শিবিরের যুক্তি, গহলৌত বিধায়কদের হোটেল-বন্দি করে শীর্ষ নেতৃত্বকে দেখাতে চাইছেন, তিনিই দলের ভাঙন রুখলেন। পাইলটের এক ঘনিষ্ঠ বিধায়ক তো প্রথমে হোটেলেই যেতে চাননি। নেতাদের এই দ্বন্দ্বে কংগ্রেসেরই কিছু নেতা বিরক্ত। বিধায়ক ভরত সিংহ এআইসিসি-কে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, একে তো এমন নেতাকে প্রার্থী করা হয়েছে, যাঁকে রাজ্যের লোক চেনেনই না। তাঁর ইঙ্গিত রাজস্থান থেকে রাজ্যসভার প্রার্থী এআইসিসি-তে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত কে সি বেণুগোপালের দিকে। ভরতের যুক্তি, এত পরিশ্রম যদি দলের নেতারা লোকসভা ভোটে করতেন, তা হলে কাজ হত।