তাঁর বক্তৃতায় নিউ ইয়র্কের ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনের ‘মিনি ভারতকে’ মুগ্ধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু রাত পোহাতেই সেই বক্তৃতা নিয়ে সমালোচনায় সরব হল কংগ্রেস।
কংগ্রেসের কটাক্ষ, কালকের বক্তৃতায় মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর নামটাই ভুল বলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। দু-দু’বার। নরেন্দ্র মোদীর এই ভ্রান্তি প্রথম নয়। লোকসভা ভোট প্রচারেও এক বার গাঁধীর পুরো নাম ভুল বলেছিলেন তিনি। কাল নিউ ইয়র্কের ম্যাডিসন স্কোয়ারে ফের তিনি বলেন, ‘মোহনলাল কর্মচন্দ গাঁধী’।
মজার কথা, ২ অক্টোবর মহাত্মা গাঁধীর জন্মদিনে দেশ জুড়ে স্বচ্ছতা অভিযান শুরু করবেন প্রধানমন্ত্রী। তা ছাড়া, গাঁধীর ভারতে ফেরার শতবর্ষ উপলক্ষে আগামী বছর প্রবাসী দিবস দিল্লিতে নয়, আমদাবাদে পালিত হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
ম্যাডিসনের মঞ্চে ভ্রান্তির প্রসঙ্গে কংগ্রেস মুখপাত্র রাজ বব্বর আজ বলেন, “গাঁধীর মতাদর্শ যাঁরা বুঝেছেন, তাঁরা ওঁর নাম কখনওই ভুল বলবেন না। যাঁরা রাজনৈতিক উদ্দেশে ওঁর নাম ব্যবহার করেন, তাঁরা ভুল বলতেই পারেন।” আরএসএসের নাম উল্লেখ না করে রাজ বব্বরের কটাক্ষ, “অনেকে প্রশ্ন করেন, গাঁধী আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, আমরা তাঁকে কী দিয়েছি? জবাবে বলা যায়, গাঁধীকে হত্যা করা হয়েছিল।”
প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরকালে জাতীয় রাজনীতিতে তাঁর সমালোচনা না করাই দস্তুর। কিন্তু কংগ্রেসের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রীর সরকারি কর্মসূচি প্রসঙ্গে কোনও নেতিবাচক মন্তব্য দল করছে না। বরং রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তান সম্পর্কে যে অবস্থান নিয়েছেন তাকে কংগ্রেস সমর্থন জানাচ্ছে। কিন্তু ম্যাডিসন স্কোয়ারের মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী ঘরোয়া রাজনীতিতে বিরোধীদের খোঁচা দিতে ছাড়েননি। ফলে পাল্টা সমালোচনা হবেই।
মোদীকে কটাক্ষ করে কংগ্রেস মুখপাত্র এ দিন বলেন, লোকসভা ভোট প্রচারে নরেন্দ্র মোদী গোটা দেশে ঘুরে ঘুরে বলতেন, গত ষাট বছরে কংগ্রেস দেশে কিছুই করেনি। কিন্তু আমেরিকায় গিয়ে তিনি স্বীকার করেছেন যে গত ষাট বছরে দেশে মজবুত গণতন্ত্র কায়েম হয়েছে, দেশের মানুষের কাজের দক্ষতা বেড়েছে, উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে ইত্যাদি। তা ছাড়া, প্রধানমন্ত্রী এ-ও বলেছেন যে, ভারত এখন আর সাপ-সাপুড়ের দেশ নয়, যুব সমাজ কম্পিউটারের মাউজ নিয়ে খেলে। কংগ্রেস মুখপাত্রের কথায়, নিঃসন্দেহে এর কৃতিত্ব জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরা গাঁধী বা রাজীব গাঁধীর প্রাপ্য। বিশেষ করে দেশে কম্পিউটারের প্রচলন ও টেলি-যোগাযোগ ব্যবস্থার সংস্কারে রাজীব গাঁধীর অবদান অসামান্য।