কোঝিকোড়ে লকডাউনে নজরদারি। ছবি: পিটিআই।
দিন-রাত লড়াই করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। লকডাউনের মধ্যেও চালু আছে জরুরি পরিষেবা। এরই পাশাপাশি সামাজিক দায়িত্ব পালনের জন্য স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী গড়ার সিদ্ধান্ত নিল কেরলের সরকার। বিশেষ পারদর্শিতার কোনও কাজ তাঁদের করতে হবে না। স্বেচ্ছাসেবীদের দায়িত্ব হবে বিপন্ন মানুষকে সহায়তা। তাঁদের জন্য পরিচয়পত্র এবং কিছু পারিশ্রমিকের ব্যবস্থা করবে সরকার।
কেরলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দেড়শো ছাড়িয়েছে। আইসোলেশন এবং কোয়ারন্টিনে থাকা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যের নানা প্রান্তে কমিউনিটি কিচেন চালু করেছে কেরলের বাম সরকার। যাঁদের ঘর থেকে বার হওয়াই সমস্যা, তাঁদের জন্য ওই কমিউনিটি কিচেন থেকে রান্না করা খাবার নিয়ে গিয়ে পৌঁছে দিতে হবে স্বেচ্ছাসেবী বাহিনীকে। রাজ্যের ৯৪১টি পঞ্চায়েতের প্রতিটিকে ২০০ জন করে, ৮৪টি পুরসভাকে ৫০০ জন করে এবং ৬টি পুর-নিগমকে ৭৫০ জন করে স্বেচ্ছাসেবী বেছে নিয়ে নাম পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। মোট দু’লক্ষ ৩৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবীকে নিয়ে বাহিনী গড়ার পরিকল্পনা হয়েছে। নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে ২২ থেকে ৪০ বছরের তরুণ-তরুণীরা স্বেচ্ছাসেবী হওয়ার আবেদন জানাতে পারবেন। স্বেচ্ছাসেবী বাছতে গিয়ে রাজনৈতিক রঙের বাছ-বিচার না করার কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
কেরলের স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী কে কে শৈলজার বক্তব্য, ‘‘আপৎকালীন পরিস্থিতিতে সামাজিক দায়িত্ব পালন এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সেই জন্যই স্বেচ্ছাসেবী বাহিনীর প্রয়োজন। যাঁদের প্রয়োজন, তাঁদের জন্য খাবারের প্যাকেট, ওষুধ-সহ জরুরি সামগ্রী পৌঁছে দেবেন স্বেচ্ছাসেবীরা। আরও একটা বিষয় হল, বেশ কিছু হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র এখন কোভিড-১৯ মোকাবিলার জন্যই কাজ করছেন। করোনায় আক্রান্ত নন কিন্তু অসুস্থ বা রোগী, এমন মানুষকে সহায়তাও দেবেন স্বেচ্ছাসেবীরা।’’ গৃহহীন যে সব মানুষ কোনও ভাবে দিন গুজরান করেন, তাঁদের কাছেও খাবার পৌঁছতে বলা হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী বাহিনীকে।
ভৌগোলিক কারণেই কেরলে পাহাড় বা জঙ্গলঘেরা এমন বেশ কিছু জায়গা আছে, যা মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন। লকডাউন ঘোষণার পরে ওই সব এলাকার বাসিন্দারা বহির্জগৎ থেকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। এই ধরনের পরিবারগুলিকে চিহ্নিত করে সহায়তার কাজ করবেন স্বেচ্ছাসেবীরাই।
সরকারি ব্যবস্থার পাশাপাশি অল্প দামে খাবারের ব্যবস্থা করা-সহ আরও কিছু জনস্বার্থবাহী কর্মসূচি নিয়ে আসরে নেমেছে কেরলের সিপিএম এবং তাদের সব শাখা সংগঠনও। যুব ও ছাত্র সংগঠন ডিওয়াইএফআই এবং এসএফআই যেমন স্যানিটাইজার তৈরি করে সামান্য দামে এবং প্রয়োজনবিশেষে বিনামূল্যে এলাকায় এলাকায় পৌঁছে দিচ্ছে। বোতলে থাকছে ‘ব্রেক দ্য চেন’-এর বার্তা। সঙ্গে চলছে সচেতনতার প্রচার।