Kashmir

‘এই লকডাউনে আর অসুবিধে হবে না’

এ বারের লকডাউনে বরং কিছুটা স্বস্তিতে আছি আমরা। টুজি হলেও ইন্টারনেট অন্তত চালু রয়েছে।

Advertisement

সাবির ইবন ইউসুফ

শ্রীনগর শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২০ ০৪:৩৯
Share:

ছবি: পিটিআই।

করোনা সতর্কতার জেরে গোটা দেশেই লকডাউন হয়েছে। কাশ্মীরে অবশ্য লকডাউন নতুন নয়। তবে এ বারের লকডাউনে কারও আপত্তি নেই। সকলেই বলছেন, যদি লকডাউন করে করোনাভাইরাসের মোকাবিলা করা যায় তবে সেটা মেনে চলাই ভাল। শ্রীনগরের বাসিন্দা শরিফ আহমেদ আহমেদের মতে, ‘‘কাশ্মীরে চিকিৎসার ব্যবস্থা সুবিধের নয়। লকডাউনে আর বিশেষ অসুবিধে হবে না। আমরা অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি।’’ আমারও তাই মনে হয়।

Advertisement

গত অগস্টে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপ করে রাজ্যকে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করে নরেন্দ্র মোদী সরকার। তার পর থেকে আট মাস কার্যত লকডাউনের মধ্যেই বাস করেছি আমরা। ছিল না ইন্টারনেটও। গৃহবন্দি দশা থেকে মুক্তি পেয়ে হাল্কা সুরে ওমর আবদুল্লা বলেছেন, তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় থাকার সময়ে কী করতে হবে তা নিয়ে পরামর্শ দিতে পারেন। বস্তুত এ নিয়ে সব কাশ্মীরিই বাকি দেশবাসীকে কিছু না কিছু বলতে পারেন।

লকডাউনের সময়ে আমি একটা রুটিন মেনে চলি। সাধারণত ভোর সাড়ে চারটেতেই উঠি। তার পরে নমাজ সেরে কিছুটা হাঁটাহাঁটি করি। কিন্তু লকডাউনের সময়ে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দোকান খোলার সময় বাঁধা থাকে। ভোর সাড়ে ছ’টা থেকে সকাল আটটার মধ্যেই যাবতীয় জিনিস কিনে নিতে হয় আমাদের। আমরা সকলেই বেশ কিছু দিনের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী কিনে নেওয়ার চেষ্টা করি।

Advertisement

এ বারে আমি বেশ কিছুটা চাল, আটা, ছ’টি মুরগির মাংস, এক বাক্স ডিম আর অন্যান্য বেশ কিছু সামগ্রী কিনে এনেছি। ডিম-মুরগি দিন পনেরো চলবে। চাল-আটা চলবে মাসখানেক।

এ বারের লকডাউনে বরং কিছুটা স্বস্তিতে আছি আমরা। টুজি হলেও ইন্টারনেট অন্তত চালু রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াও খোলা হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুকে অন্তত একে অপরের সঙ্গে কথা বলতে পারছি। বইও পড়তে পারছি।

আম কাশ্মীরি যে অন্যকে সাহায্য করতে সব সময়েই উদ্যোগী, ফের তার প্রমাণ মিলেছে আজ। লকডাউনের সময়ে শ্রীনগরের গরিব মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিলি করার অনুমতি চেয়েছিলেন কেউ কেউ। আজ শ্রীনগরের জেলাশাসক শাহিদ চৌধুরি বলেছেন, ‘‘২৮ মার্চ থেকে শ্রীনগরের বাসিন্দা ১ লক্ষ ৬০ হাজার পরিবারের বাড়িতে রেশন পৌঁছনোর কাজ শুরু হবে। পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেট, খাদ্য দফতর, কৃষি দফতর এবং স্বেচ্ছাসেবকেরা হাত মিলিয়ে এ কাজ করবেন।’’

তবে লকডাউন তো আর স্বাভাবিক অবস্থা নয়। সকলের মতো কাশ্মীরিরাও চান, দ্রুত কেটে যাক করোনা-বিপদের মেঘ। ফের স্বাভাবিক হোক দেশ। ছন্দ ফিরুক উপত্যকাতেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন