Coronavirus

আক্রান্ত ৫২৯৭২, ২৪ ঘণ্টার হিসাবে বার আমেরিকাকেও ছাপিয়ে শীর্ষে ভারত

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা পরীক্ষা হয়েছে তিন লক্ষ ৮১ হাজার ২৭ জনের। গত কয়েকদিনের তুলনায় যা অনেকটা কম।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২০ ১০:২৮
Share:

ভারতে মোট করোনা আক্রান্ত হলেন ১৮ লক্ষ তিন হাজার ৬৯৫ জন। গ্রাফিক-শৌভিক দেবনাথ।

কিছুটা হলেও স্বস্তি দিল গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা। শনিবার যা ছিল ৫৭ হাজার, রবিবার কমে হয়েছিল ৫৫ হাজার, সোমবার তা ৫৩ হাজারেরও নীচে নেমে এল। এই বৃদ্ধির জেরে ১৮ লক্ষ পেরলো দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। সুস্থ হয়ে ওঠার হারও বেড়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। কিন্তু দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে ফের বেড়ে গেল সংক্রমণ হার। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা পরীক্ষাও হয়েছে গত কয়েক দিনের তুলনায় বেশ খানিকটা কম।

Advertisement

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২ হাজার ৯৭২ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। সেখানে আমেরিকা ও ব্রাজিলে ওই সময়ের মধ্যে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৪৭ হাজার ৫১১ ও ২৫ হাজার ৮০০। অর্থাৎ এই সময়ের হিসাবে আক্রান্তের নিরিখে আমেরিকা ও ব্রাজিলকে পিছনে ফেলল ভারত। এই বৃদ্ধির জেরে ভারতে মোট করোনা আক্রান্ত হলেন ১৮ লক্ষ তিন হাজার ৬৯৫ জন। যেখানে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে মোট আক্রান্ত ২৭ লক্ষ ৩৩ হাজার ও প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাতে ৪৬ লক্ষ ৬৭ হাজার।

প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে, তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার। শনি-রবিবার তা কিছু কম থাকলেন সোমবার ফের বাড়ল তা। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমণের হার ১৩.৯ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা পরীক্ষা হয়েছে তিন লক্ষ ৮১ হাজার ২৭ জনের। গত কয়েক দিনের তুলনায় যা অনেকটা কম।

Advertisement

আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও, ভারতে করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যানটাও বেশ স্বস্তিদায়ক। এখনও পর্যন্ত মোট ১১ লক্ষ ৮৬ হাজার ২০১ জন করোনা আক্রান্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের প্রায় ৬৫.৭৭ শতাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪০ হাজার ৫৭৪ জন।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)

মৃত্যুর নিরিখে স্পেন, ফ্রান্স, ইটালিকে পিছনে ফেলে বিশ্বের পঞ্চম স্থানে রয়েছে ভারত। যদিও মৃত্যুর হার ওই সব দেশগুলির তুলনায় ভারতে অনেকটাই কম। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ৭৭১ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ৩৮ হাজার ১৩৫ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ১৫ হাজার ৫৭৬ জন। দিল্লিকে পিছনে ফেলে মৃত্যু তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে তামিলনাড়ু। দক্ষিণের এই রাজ্যে মোট মৃত চার হাজার ১৩২ জন। রাজধানীতে সেই সংখ্যাটা চার হাজার চার জন।

জুলাই জুড়েই মৃত্যু বেড়ে তালিকার চতুর্থ স্থানে উঠে এল কর্নাটক। সেখানে কোভিডের কারণে এখনও অবধি দু’হাজার ৪৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুজরাতে দু’হাজার ৪৮৬ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনাভাইরাস। উত্তরপ্রদেশ (১,৭৩০), পশ্চিমবঙ্গ (১,৬৭৮) ও অন্ধ্রপ্রদেশে (১,৪৭৪) মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে রোজদিন বেড়েই চলেছে।এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ (৮৮৬), রাজস্থান (৭০৩), তেলঙ্গানা (৫৪০), হরিয়ানা (৪৩৩), পঞ্জাব (৪২৩), জম্মু ও কাশ্মীর (৩৯৬), বিহার (৩২৯), ওড়িশা (১৯৭) ও ঝাড়খণ্ড (১১৮)। বাকি রাজ্যগুলিতে মৃতের সংখ্যা এখনও ১০০ পেরোয়নি।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

শুরু থেকেই মহারাষ্ট্র সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে। সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত চার লক্ষ ৪১ হাজার ২২৮। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত দু’লক্ষ ৫৭ হাজার ৬১৩ জন। গত কয়েক দিন ধরে রোজ প্রায় দশ হাজার করে নতুন সংক্রমণ হচ্ছে অন্ধ্রপ্রদেশে। যার জেরে দক্ষিণের এই রাজ্য উঠে এসেছে সংক্রমণ তালিকায় তৃতীয় স্থানে। সেখানে এখন মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ৫৮ হাজার ৭৬৪ জন। তবে জুলাই জুড়েই রাজধানী দিল্লিতে দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধিতে বেশ খানিকটা লাগাম পড়েছে। যার জেরে সেখানে দৈনিক আক্রান্ত বৃদ্ধি এক হাজারের ঘরেই সীমাবদ্ধ। রাজধানীতে মোট আক্রান্ত হয়েছেন এক লক্ষ ৩৭ হাজার ৬৭৭ জন। তালিকার পঞ্চমে থাকা কর্নাটকে মোট আক্রান্ত হয়েছেন এক লক্ষ ৩৪ হাজার ৮১৯ জন।

উত্তরপ্রদেশ (৯২,৯২১), পশ্চিমবঙ্গ (৭৫,৫১৬), তেলঙ্গানা (৬৬,৬৭৭), গুজরাত (৬৩,৫৬২) ও বিহারে (৫৭,০২৪) আক্রান্তের সংখ্যা প্রতি দিন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে রাজস্থান (৪৩,৮০৪), অসম (৪২,৯০৪), হরিয়ানা (৩৬,৫১৯), ওড়িশা (৩৪,৯১৩), মধ্যপ্রদেশ (৩৩,৫৩৫), কেরল (২৫,৯১১), জম্মু ও কাশ্মীর (২১,৪১৬), পঞ্জাব (১৭,৮৫৩) ও ঝাড়খণ্ড (১২,৫২৩)। ছত্তীসগঢ়, উত্তরাখণ্ড, গোয়া, ত্রিপুরার মতো রাজ্যে মোট আক্রান্ত এখনও দশ হাজারের কম।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

পশ্চিমবঙ্গেও রোজদিন বাড়ছে করোনা আক্রান্ত। রবিবার সন্ধ্যায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুসারে, নতুন করে দু’হাজার ৭৮৪ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। এক দিনে আক্রান্তের নিরিখে যা এখনও অবধি সর্বোচ্চ। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ৭৫ হাজার ৫১৬ জন। গত চার-পাঁচ দিন ধরেই রাজ্যে সংক্রমণের হার ১৩ শতাংশের আশে পাশে ঘোরাফেরা করছে। সঙ্গে ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে মৃত্যুতেও। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪৯ জনের। করোনার কবলে পড়ে রাজ্যে প্রাণ হারালেন মোট এক হাজার ৬৭৮ জন।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন