Coronavirus

২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৭ হাজার নতুন সংক্রমণ, মোট মৃত্যু পেরলো ১৫ হাজার

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭ হাজার ২৯৬ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন কোভিডে। ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের নিরিখে যা সর্বাধিক।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২০ ১০:১৬
Share:

করোনাভাইরাসে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন চার লক্ষ ৯০ হাজার ৪০১ জন। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

গত সপ্তাহে ১৫ হাজার, গত দু’তিন দিন ১৬ হাজার, শুক্রবার ১৭ হাজার। এ ভাবেই ফি-দিন বাড়ছে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা। এই সংক্রমণ বৃদ্ধি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে চিকিৎসক থেকে বিশেষজ্ঞদের। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭ হাজার ২৯৬ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন কোভিডে। ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের নিরিখে যা সর্বাধিক। দেশে এক দিনে এত জনের সংক্রমণ এর আগে হয়নি। এ নিয়ে ভারতে মোট আক্রান্ত হলেন চার লক্ষ ৯০ হাজার ৪০১ জন। মহারাষ্ট্র, দিল্লি ও তামিলনাড়ু— দেশের মোট আক্রান্তের প্রায় ৬০ শতাংশই এই তিনটি রাজ্য থেকে।

Advertisement

আক্রান্তের পাশাপাশি করোনায় মৃত্যুও বাড়াচ্ছে উদ্বেগ। দেশে মৃতের সংখ্যা শুক্রবার ১৫ হাজার ছাড়াল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত দেশে ১৫ হাজার ৩০১ জনের মৃত্যু হল করোনার কারণে। এর মধ্যে প্রায় সাত হাজার মৃত্যু হয়েছে শুধু মহারাষ্ট্রেই। দিল্লিতেও বাড়তে বাড়তে সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে দু’হাজার ৪২৯-এ। তৃতীয় স্থানে থাকা গুজরাতে মারা গিয়েছেন এক হাজার ৭৫৩ জন। বিগত কয়েক সপ্তাহে ধারাবাহিক ভাবে বেড়ে তামিলনাড়ুর মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়াল ৮৬৬-তে। এর পরই তালিকায় রয়েছে উত্তরপ্রদেশ (৬১১), পশ্চিমবঙ্গ (৬০৬) ও মধ্যপ্রদেশ (৫৪২)। এ ছাড়া শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে রাজস্থান (৩৭৯), তেলঙ্গানা (২৩০), হরিয়ানা (১৯৮), কর্নাটক (১৭০), অন্ধ্রপ্রদেশ (১৩৬) ও পঞ্জাব (১২০)।

আক্রান্ত ও মৃত্যু বাড়লেও রোজদিন সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাটাও স্বস্তি দিচ্ছে। এখন দেশে সুস্থ হয়ে ওঠা করোনা রোগীর সংখ্যা সক্রিয় করোনা আক্রান্তের চেয়ে বেশি। মোট আক্রান্তের অর্ধেকেরও বেশি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ৯৪০ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট দু’লক্ষ ৮৫ হাজার ৬৩৭ জন দেশবাসী করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন।

Advertisement

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

গোড়া থেকেই দেশে করোনা সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র। সেখানে মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ৪৭ হাজার ৭৪১ জন। বিগত কয়েক দিনের তুলনায়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বেড়েছে সে রাজ্যে। শুক্রবার চার হাজার ৮৪১ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। দিল্লিতেও রোজদিন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। বেশ দ্রুতগতিতে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে সেখানে। এখনও অবধি মোট আক্রান্ত ৭৩ হাজার ৭৮০ জন আক্রান্ত হয়েছেন দেশের রাজধানীতে। তৃতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত ৭০ হাজার ৯৭৭ জন। চতুর্থ স্থানে থাকা গুজরাতে মোট আক্রান্ত ২৯ হাজার ৫২০ জন।

উত্তরপ্রদেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা শুক্রবার ২০ হাজার পার করেছে। করোনা সংক্রমণের হিসাবে এর পর রয়েছে রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা, তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্নাটক। এই সব রাজ্যগুলি ১০ হাজারের গণ্ডি পার করে এগিয়ে চলেছে। রাজস্থান (১৬,২৯৬), পশ্চিমবঙ্গ (১৫,৬৪৮), মধ্যপ্রদেশ (১২,৫৯৬), হরিয়ানা (১২,৪৬৩), তেলঙ্গানা (১১,৩৬৪), অন্ধ্রপ্রদেশ (১০,৮৮৪) ও কর্নাটকে (১০,৫৬০) জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে বিহার (৮,৪৭৩), জম্মু ও কাশ্মীর (৬,৫৪৯), অসম (৬,৩২১), ওড়িশা (৫,৯৬২), পঞ্জাব (৪,৭৬৯), কেরল (৩,৭২৬)-এর মতো রাজ্যগুলি।

গত ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গেও বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। ৪৭৫ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন এ রাজ্যে। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত হলেন ১৫ হাজার ৬৪৮ জন। এর মধ্যে কলকাতায় আক্রান্ত পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে। পাশাপাশি এই রোগে রাজ্যে মৃতের সংখ্যা হল ৬০৬। আক্রান্ত ও মৃতের পাশাপাশি রাজ্যের সুস্থ হওয়ার সংখ্যাটাও উল্লেখযোগ্য। কোভিডে আক্রান্ত হয়েও রাজ্যের ১০ হাজার ১৯০ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন