এভাবেই অশান্তি ছড়িয়েছিল ভীমা কোরেগাঁও এলাকায়। —ফাইল ছবি
দেশ জুড়ে বিদ্বজ্জনদের ধরপাকড় শুরু করল পুণে পুলিশ। এ বছরের জানুয়ারিতে মহারাষ্ট্রের ভীমা কোরেগাঁওয়ে দলিতদের বিজয় দিবস উপলক্ষে ব্যাপক অশান্তি ছড়ায়। ওই ঘটনার তদন্তে মঙ্গলবার একযোগে দেশের বড় বড় শহরে অভিযানে নামে পুলিশের বিশেষ বাহিনী। অভিযান হয় ফরিদাবাদ, গোয়া, মুম্বই, ঠাণে, রাঁচি, হায়দরাবাদে।
ফরিদাবাদ থেকে সমাজকর্মী সুধা ভরদ্বাজ এবং হায়দরাবাদ থেকে কবি ও মানবাধিকার কর্মী ভারাভারা রাওকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ছাড়াও জেলে ঢোকানো হয়েছে গৌতম নাভলাখা, অরুণ ফেরেরা, ভার্নন গঞ্জালভেসকে। এ ছাড়া রাঁচিতে ফাদার স্ট্যান স্বামীর বাড়িতেও অভিযান হয়। সেখান থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয় ল্যাপটপ, পেন ড্রাইভ-সহ বেশ কিছু সরঞ্জাম।
মরাঠা পেশোয়াদের বিরুদ্ধে জয়কে ‘বিজয় দিবস’ পালন করতে এ বছরের পয়লা জানুয়ারি মহারাষ্ট্রের ভীমা কোরেগাঁও এলাকায় গোটা রাজ্য থেকে জমায়েত হন দলিত সম্প্রদায়ের মানুষজন। সেখানেই উচ্চ বর্ণের সঙ্গে দলিতদের সংঘর্ষ হয়। দলিতদের ডাকে মহারাষ্ট্রে বন্ধে কার্যত তিন দিন ধরে কার্যত অচল ছিল মহারাষ্ট্র। সেই ঘটনার তদন্তেই এই ধরপাকড় বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে।
গৌতম নাভলাখার গ্রেফতারির ভিডিও।
আরও পড়ুন: হায়দরাবাদের বাড়ি থেকে ভারাভারা রাওকে তুলে নিয়ে গেল পুণে পুলিশ
আরও পড়ুন: ৮৭ কোটি টাকা হাতাতে গিয়ে নিজের পকেটই কাটলেন বিজয়!
অন্য দিকে পুলিশের এই ভূমিকার তীব্র নিন্দা করেছে বিদ্বজ্জন সমাজ। লেখিকা অরুন্ধতী রায় বলেন, ‘‘কবি, সাহিত্যিক, দলিত আন্দোলনকারী, আইনজীবীদের বাড়িতে অভিযান চালানো হচ্ছে। জেলে ভরা হচ্ছে। ওদের উচিত গোরক্ষার নামে যাঁরা গণপিটুনি দিয়ে সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে এবং উস্কানি দিচ্ছে, তাঁদের গ্রেফতার করা।’’ এছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সরব হয়েছেন বিভিন্ন স্তরের সমাজকর্মীরা।
আরও পড়ুন: ঠিক যেন জরুরি অবস্থা, বললেন অরুন্ধতী, নিন্দার ঝড় দেশ জুড়ে
তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও। একটি বিবৃতিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘‘ভয়-ভীতির পরিবেশ সৃষ্টির বদলে ভারতের উচিত মত প্রকাশ, সভা সমিতি গঠন এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার রক্ষা করা। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, বিদ্বজ্জনদের প্রতিবাদী ভাবমূর্তি এবং কাজকর্মের জন্যই কি তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।’’