পঞ্জাবে দোষী সাব্যস্ত পাঁচ প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিক। —প্রতীকী চিত্র।
ডাকাতির ভুয়ো মামলা সাজিয়েছিল পুলিশ। তার পরে দু’টি পৃথক ঘটনায় ভুয়ো সংঘর্ষে সাত জনকে খুনের অভিযোগ ওঠে। ১৯৯৩ সালের ওই ঘটনায় এ বার পঞ্জাবের পাঁচ পুলিশ আধিকারিককে দোষী সাব্যস্ত করল আদালত।
১৯৯৩ সালের ওই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন উঠেছিল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ওই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চালাচ্ছিল সিবিআই। ঘটনার ৩২ বছর পরে সম্প্রতি ওই মামলায় রায় দিয়েছে পঞ্জাবের মোহালির এক বিশেষ সিবিআই আদালত। ঘটনায় তরনতারন জেলার এক অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র পুলিশ সুপার (এসএসপি), অবসরপ্রাপ্ত ডেপুটি পুলিশ সুপার (ডিএসপি)-সহ পাঁচ প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিককে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত।
কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তে উঠে আসে, ওই বছরের জুনে পঞ্জাবের তরনতারন জেলায় এক ঠিকাদারের বাড়ি থেকে চার জনকে আটক করেছিল পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে ডাকাতির ভুয়ো মামলা রুজু করেছিল পুলিশ। ঘটনার পাঁচ দিন পরে পুলিশ আরও একটি মামলা রুজু করে। সেখানে বলা হয়, ধৃতদের মধ্যে তিন জন সরকারি অস্ত্র লুঠ করে পালিয়ে গিয়েছেন। ওই ঘটনার তদন্তে পুলিশ মঙ্গল সিংহ নামে এক ব্যক্তিতে নিয়ে ডাকাতি হওয়া জিনিসপত্র উদ্ধার করতে যায়। পুলিশের দাবি, সেই সময় এক দল দুষ্কৃতী তাঁদের উপর হামলা চালিয়েছিল। ওই সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মঙ্গল-সহ চার জনের মৃত্যু হয় বলে দাবি করে পুলিশ। ওই ‘এনকাউন্টারে’র ১৬ দিন পরে ডাকাতির মামলায় দ্বিতীয় ‘এনকাউন্টারে’ আরও তিন জনের মৃত্যু হয়। দু’টি ঘটনা মিলিয়ে মোট সাত জনের মৃত্যু হয়।
পুলিশ বিষয়টিকে ‘এনকাউন্টার’ বলে দেখালেও সিবিআই তদন্তে উঠে আসে ডাকাতির মামলাটিই ভুয়ো। বাজেয়াপ্ত হওয়া অস্ত্র এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্টও বিশ্লেষণ করে দেখে সিবিআই। তাতে পুলিশের বক্তব্যের সঙ্গে বিস্তর ফারাক উঠে আসে। মৃত্যুর আগে ওই সাত জনের উপর অত্যাচার চালানো হয়েছিল বলেও জানতে পারেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। পাশাপাশি, মৃতদের প্রত্যেকেরই পরিচয় জানা ছিল পুলিশের। তার পরেও কেন দেহগুলিকে ‘বেওয়ারিশ’ বলে ঘোষণা করা হয়েছিল , তা নিয়েও সন্দেহ জাগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের মনে। সিবিআই জানায়, তরনতারন জেলার তৎকালীন পুলিশকর্তারাও এই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন।