প্রধান বিচারপতিকে সরানোর তোড়জোড়

প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর বিরুদ্ধে ‘ইমপিচমেন্ট’ বা অপসারণের প্রস্তাব নিয়ে বিরোধী শিবিরে আলোচনা শুরু হল। সীতারাম ইয়েচুরির নেতৃত্বে বাম নেতারা অন্য বিরোধী দলগুলির সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:০০
Share:

প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর বিরুদ্ধে ‘ইমপিচমেন্ট’ বা অপসারণের প্রস্তাব নিয়ে বিরোধী শিবিরে আলোচনা শুরু হল। সীতারাম ইয়েচুরির নেতৃত্বে বাম নেতারা অন্য বিরোধী দলগুলির সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছেন। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘আমরা ইমপিচমেন্ট প্রস্তাবের দিকে এগোচ্ছি। মনে হয়, ২৯ জানুয়ারি সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরুর আগেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’

Advertisement

সূত্রের খবর, সিপিএম ও সিপিআই নেতারা কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি, এনসিপি ও আরজেডি নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কংগ্রেস এখনও অবস্থান স্পষ্ট করেনি। বাকিরা এর পক্ষে। কংগ্রেস এখনও দ্বিধাবিভক্ত। এ নিয়ে কংগ্রেসের আইনজীবী নেতাদের বৈঠক হয়েছে। কপিল সিব্বল পক্ষে থাকলেও, পি চিদম্বরম, অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিরা এর পক্ষে নন। শীঘ্র বিরোধীদের বৈঠক ডাকা হতে পারে।

ইয়েচুরির যুক্তি, ‘‘প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে গুরুতর কিছু বিষয় উত্থাপন করা হয়েছিল। আমরা বিচারবিভাগের নিরপেক্ষতা, স্বাধীনতা চাই। ভেবেছিলাম, বিচারবিভাগের মধ্যেই সমস্যা মিটবে। কিন্তু দু’সপ্তাহ কাটতে চললেও এর সমাধান হয়নি।’’ ইতিমধ্যে অন্যান্য দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে। ইয়েচুরি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতো প্রতিষ্ঠানকে সংশোধন ছাড়া উপায় নেই। একমাত্র ইমপিচমেন্টেই তা সম্ভব। প্রশাসন ও সংসদের দায়িত্ব, বিচার বিভাগের সঙ্কট কাটাতে একজোট হওয়া।’’ এমন প্রস্তাব আনা হলে, এ দেশে প্রথম কোনও প্রধান বিচারপতির অপসারণের প্রস্তাব আনা হবে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমিত্র সেনের ইমপিচমেন্টের সময়ও ইয়েচুরি প্রধান ভূমিকা নিয়েছিলেন। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা হিসেবে তখন তাঁর সঙ্গে ছিলেন অরুণ জেটলি। বিচারপতি হিসেবে সৌমিত্র সেনের ভূমিকার বদলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ ছিল, তিনি আইনজীবী হিসেবে আর্থিক বেনিয়ম করেছিলেন। রাজনীতিকরা মনে করছেন, এ বারও প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর বিরুদ্ধে তিনি আইনজীবী থাকার সময় যে মিথ্যে তথ্য দিয়ে সরকারি জমি নিয়েছিলেন, সেই অভিযোগ প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে।

Advertisement

১৯৭৯-তে ওডিশা সরকারের থেকে দু’একর জমি নেন প্রধান বিচারপতি মিশ্র। হলফনামা দিয়ে বলেন, তিনি ব্রাহ্মণ। তাঁর পরিবারের কোনও জমি নেই। মিথ্যে তথ্য দেওয়ার অভিযোগে পরে সেই জমি কেড়ে নেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও তিনি বহু দিন জমি দখল করে রেখেছিলেন বলে অভিযোগ। সম্প্রতি আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ এই অভিযোগ তুলেছেন। লখনউ মেডিক্যাল কলেজের ঘুষ-কাণ্ডেও প্রধান বিচারপতির ভূমিকার তদন্ত দাবি করেছেন ভূষণ। তাঁর যুক্তি, ওই দুর্নীতির তদন্তে সিবিআইয়ের কাছে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে প্রমাণ থাকলে, সরকার তা ‘ব্ল্যাকমেল’-এর জন্য কাজে লাগাতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement