রাকেশ আস্থানা। —ফাইল চিত্র
ঘুষ মামলায় দিল্লি হাইকোর্টে বড়সড় ধাক্কা খেলেন ছুটিতে থাকা সিবিআই-এর স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানা। তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআর বাতিলের আর্জি জানান আস্থানা। কিন্তু সেই আর্জি খারিজ করে দিল্লি হাইকোর্ট জানিয়ে দিল, রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগের তদন্ত চালাতে পারবে সিবিআই। পাশাপাশি সিবিআই-কে দশ সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করে চার্জশিট জমা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট।
সিবিআই-এর কোনও অফিসারের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে হলে সরকারের অনুমতি নেওয়াই দস্তুর। কিন্তু দিল্লি হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, দণ্ডনীয় অপরাধের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠলে অবশ্যই তার তদন্ত হবে।
কানপুরের মাংস ব্যবসায়ী মইন কুরেশির বিরুদ্ধে আয়কর ফাঁকির মামলার তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন রাকেশ আস্থানা। অভিযোগ, সেই তদন্তে কুরেশির সহযোগী হায়দরাবাদের ব্যবসায়ী সতীশ বাবু সানার কাছ থেকে দু’কোটি টাকা ঘুষ নেন। সেই খবর সিবিআই-এর কানে পৌঁছতেই রাকেশ আস্থানা, সিবিআই-এর ডিএসপি দেবেন্দ্র কুমার এবং মনোজ প্রসাদ নামে এক মধ্যস্থতাকারীর বিরুদ্ধে গত ১৫ অক্টোবর এফআইআর দায়ের করে সিবিআই।
সেই এফআইআর বাতিলের আবেদন নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আস্থানা-সহ তিন অভিযুক্ত। সদ্য অপসারিত প্রাক্তন সিবিআই ডিরেক্টর অলোক বর্মা-সহ সব পক্ষের বক্তব্য শুনে গত ২০ ডিসেম্বর বিচারপতি নাজমি ওয়াজিরি জানিয়ে দেন, রায় দেওয়া হবে ১১ জানুয়ারি। আজ সেই রায়ে আস্থানাদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ‘স্বাভাবিক ন্যায়বিচার হয়নি’, চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে তোপ অপসারিত অলোক বর্মার
আদালতে আস্থানার আইনজীবী অমরেন্দ্র শরন যুক্তি দেন, দুর্নীতি দমন আইনের ১৭ (এ) ধারায় বলা হয়েছে, কোনও পদস্থ অফিসারের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে হলে সরকারের অনুমতি প্রয়োজন। তাছাড়া রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করার উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশনের। অন্য দিকে সিবিআই-এর আইনজীবী বিক্রমজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় যুক্তি দেন এফআইআর দায়ের করার আগে বিভিন্ন জনের মতামত নেওয়া হয়। রাকেশ আস্থানার আইনজীবীর যুক্তি খারিজ করে দিয়ে মামলা চালানোর অনুমতি দেন বিচারপতি ওয়াজিরি।
আরও পড়ুন: পর্নোগ্রাফি রুখতে ১.৩ লক্ষ অ্যাকাউন্ট ব্লক করল হোয়াটসঅ্যাপ
বৃহস্পতিবারই অলোক বর্মাকে সিবিআই ডিরেক্টরের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মূলত রাকেশ আস্থানার সঙ্গে বিবাদের জেরেই গত ২৩ অক্টোবর মধ্যরাতে দু’জনকেই ছুটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তার পর সুপ্রিম কোর্টের রায়ে পদ ফিরে পান অলোক বর্মা। কিন্তু তার দু’দিনের মধ্যেই তাঁক অপসারণ করে দমকলের ডিরেক্টরের পদে বদলি করে দেওয়া হয়। কিন্তু সেই পদে যোগ দিতে অস্বীকার করে চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন অলোক বর্মা। অন্য দিকে ছুটিতেই ছিলেন রাকেশ আস্থানা। এ বার দিল্লি হাইকোর্ট তাঁর বিরুদ্ধে রায় দেওয়ায় আরও বিপাকে পড়লেন সিবিআই-এর নাম্বার টু, রাকেশ আস্থানাও।
(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)