চারিদিক ঢেকেছে ধোঁয়াশায়। ইন্ডিয়াগেট। ছবি: পিটিআই।
ক্রমশ আরও খারাপ হচ্ছে দিল্লির বাতাসের গুণমান। এর বিহিত চেয়ে রবিবার ইন্ডিয়া গেট চত্বরে বিক্ষোভ দেখালেন দিল্লিবাসীদের একাংশ। পুলিশের হাতে আটকও হলেন কেউ কেউ।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর প্রতিবেদন সূত্রে খবর, দিল্লিতে বায়ুদূষণের প্রতিবাদে রবিবার বিকেল থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে ইন্ডিয়া গেট চত্বরে। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সাধারণ বাসিন্দাদের পাশাপাশি ছিলেন পরিবেশকর্মীরাও। কেউ কেউ আবার সন্তানদের নিয়েও এসেছিলেন। সকলেরই দাবি, দেশের রাজধানীতে বায়ুদূষণ কমানোর জন্য জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ করতে হবে সরকারকে। পরিবেশবিদ ভাবরী খান্ডারি বলেন, "আমরা আমাদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তা মানা হয়নি। অনেক বাবা-মা তাঁদের সন্তানদের নিয়ে এখানে এসেছেন, কারণ তাঁদের সন্তানেরা কষ্ট পাচ্ছে। ইতিমধ্যেই প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন শিশুর ফুসফুসে রোগ বাসা বেধেছে। এ ভাবে চলতে থাকলে এখানকার শিশুরা পরিষ্কার বাতাসে বেড়ে ওঠা শিশুদের তুলনায় অন্তত ১০ বছর কম বাঁচবে।"
উল্লেখ্য, রবিবার সকাল থেকে দিল্লির দূষণের মাত্রা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। রবিবার ভোরে দিল্লির বাতাসের গড় গুণমান (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) ছিল ৩৯২। কোনও কোনও এলাকায় সেই মান ৪০০-ও ছাড়িয়ে গিয়েছে। সেই আবহে রবিবার বিক্ষোভ দেখান দিল্লিবাসী। নয়াদিল্লির ডিসিপি দেবেশকুমার মাহলা জানিয়েছেন, পূর্ব অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও বিক্ষোভ দেখানোর জন্য কয়েক জনকে আটক করেছে পুলিশ।
সাধারণ মানুষের দূষণবিরোধী এই প্রতিবাদকে সমর্থন জানিয়েছে দিল্লির বিরোধী দল আম আদমি পার্টি (আপ)। দলের নেত্রী প্রিয়াঙ্কা কাক্কর বিজেপি সরকারের সমালোচনা করে বলেন, "রাজধানীতে যে বায়ুদূষণ চরমে পৌঁছেছে, তা মানতে চাইছে না বিজেপি। এ কারণেই দিল্লির মানুষ ক্ষুব্ধ। বিজেপি সরকারের উচিত মাঠে নেমে মানুষের পাশে দাঁড়ানো। তা না করে পরিসংখ্যানে হেরফের করছে তারা।"
আপ নেতা সৌরভ ভরদ্বাজ বলেন, " সরকার যখন নিজেই তথ্য নিয়ে কারচুপি করে, তখন সাধারণ মানুষ সরকারের উপর আস্থা হারাতে শুরু করে দেয়। সে কারণেই আজ বুদ্ধিজীবী সমাজ রাস্তায় নেমে এসেছে। এখানে দূষণ গত ১০ বছর ধরে রয়েছে। কিন্তু এখন উদ্বেগজনক বিষয় হল, এখনকার সরকার তথ্যে কারচুপি করে তা ঢাকতে চাইছে।"
বাতাসের দূষণ কী ভাবে কমানো যায়, তা নিয়ে চিন্তায় দিল্লির সরকার। দূষণের মাত্রা বিবেচনা করে তাই শনিবারই রাজধানীতে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের পথে হেঁটেছে তারা। শুধু তা-ই নয়, সরকারি কাজের সময় বদলে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত করা হয়েছে। একসঙ্গে রাস্তায় যাতে বেশি গাড়ির চাপ না-পড়ে সে কারণেই এই পরিবর্তন বলে জানিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্ত।