—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আগেই। এ বার তা পালন করার বার্তা দিল কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআরপিএফ। বুধবার বাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজি) জিপি সিংহ ঘোষণা করেছেন, ‘নিরলস এবং নির্মম অভিযানের মাধ্যমে ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যেই মাওবাদীদের দেশ থেকে নির্মূল করা হবে।’’
ছত্তীসগঢ়ের বস্তার ডিভিশনের বিজাপুর জেলা এবং পড়শি রাজ্য তেলঙ্গানার সীমানায় পাহাড়-জঙ্গলঘেরা এলাকায় গত তিন সপ্তাহ ধরে যৌথবাহিনীর সঙ্গে মাওবাদীদের লড়াই চলছে। সিআরপিএফ প্রধানের ইঙ্গিত, রেগুট্টা এবং দুর্গামগুট্টার ঘন জঙ্গলে ও পাহাড়ে ঘেরা ওই দুর্গম এলাকাতেই মাওবাদী গেরিলার বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘ফাইনাল অ্যাসল্ট’ করতে চলেছেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, ওই এলাকায় ২৪ হাজার আধাসেনা ও পুলিশের ‘জাঁতাকলে’ পড়েছেন ৫০০-রও বেশি মাওবাদী। কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআরপিএফের জঙ্গলযুদ্ধে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কমান্ডো বাহিনী ‘কোবরা’র পাশাপাশি ছত্তীসগঢ়ের সশস্ত্র পুলিশ, বস্তার ফাইটারস ও ডিস্ট্রিক্ট রিজ়ার্ভ গার্ড বাহিনী, মহারাষ্ট্র পুলিশের সি-৬০, তেলঙ্গানা পুলিশের মাওবাদী দমন বাহিনীও রয়েছে অভিযানকারী দলে।
নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই (মাওবাদী)-এর সশস্ত্র শাখা পিএলজিএ (পিপল্স লিবারেশন গেরিলা আর্মি)-র ১ নম্বর ব্যাটেলিনের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছত্তীসগঢ়-তেলাঙ্গানা সীমানাবর্তী ওই গত ২১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া ধীরে ধীরে ‘অপারেশন সঙ্কল্প’ নামে ওই অভিযান সংহত করা হচ্ছে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। এখনও পর্যন্ত সেখানে সংঘর্ষে ৪১ জন মাওবাদী গেরিলা নিহত হয়েছেন। গত এক দশকে ধারাবাহিক ভাবে মাওবাদী দমন অভিযানে সাফল্য মিলছে দাবি করে সিআরপিএফ প্রধান বলেন, ‘‘২০১৪ সালে, ‘ভয়াবহ ভাবে মাওবাদী উপদ্রুত’ জেলার সংখ্যা ছিল ৩৫টি। ২০২৫ সালে তা কমে ছ’টি হয়েছে। যেখানে মাওবাদী প্রভাবিত জেলার সংখ্যা ১২৬ থেকে কমে ১৮টিতে নেমে এসেছে।’’
মাওবাদী হিংসার পরিসংখ্যান তুলে ধরে সিআরপিএফের ডিজি জানান, ২০১৪ সালে মাওবাদী হিংসার ঘটনার সংখ্যা ছিল ১,০৮০টি। ২০২৪ সালে তা কমে ৩৭৪টি হয়েছে। ২০১৪ সালে মাওবাদী হামলায় নিহত নিরাপত্তাকর্মীর সংখ্যা ছিল ২৮৭ জন, যা ২০২৪ সালে কমে ১৯ জন হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে নিহত মাওবাদীর মোট সংখ্যা ২০৮৯। তিনি বলেন, ‘‘২০২৪ সালে ৯২৮ জন নকশাল নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। এ বছর এ পর্যন্ত আরও ৭১৮ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছেন।’’ নিরাপত্তা বাহিনী মাওবাদী বাহিনীকে তাদের আস্তানা থেকে তাড়িয়ে ‘শূন্যস্থান পূরণ’ করার চেষ্টা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘মাওবাদীমুক্ত এলাকায় এখনও পর্যন্ত ৩২০টি নতুন নিরাপত্তা শিবির স্থাপন করা হয়েছে। ৬৮টি রাতে অবতরণের উপযোগী হেলিপ্যাডও নির্মাণ করা হয়েছে।’’