Gujarat

এই হিরে ব্যবসায়ী এখন ২ হাজার মেয়ের বাবা

হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে সেই দোকানের মধ্যেই মৃত্যু হয় ঈশ্বর সাভানির। মেয়ে মিতুলা এবং আম্রুতা ভেবেছিলেন, বাবা দাঁড়িয়ে থেকে তাঁদের বিয়ে দেবেন। কিন্তু, ঈশ্বরের হঠাত্ মৃত্যু সব ইচ্ছেতে জল ঢেলে দেয়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৭ ১৭:২৪
Share:

মেয়েদের সঙ্গে গর্বিত বাবা। ছবি: সংগৃহীত।

কেনাকাটা করতে করতে গয়নার দোকানে ভদ্রলোক বুক চেপে বসেছিলেন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই সব শেষ। পরে চিকিত্সকরা জানিয়েছিলেন, ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক। গিয়েছিলেন দুই মেয়ের বিয়ের গয়না কিনতে। কিন্তু, হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে সেই দোকানের মধ্যেই মৃত্যু হয় ঈশ্বর সাভানির। মেয়ে মিতুলা এবং আম্রুতা ভেবেছিলেন, বাবা দাঁড়িয়ে থেকে তাঁদের বিয়ে দেবেন। কিন্তু, ঈশ্বরের হঠাত্ মৃত্যু সব ইচ্ছেতে জল ঢেলে দেয়।

Advertisement

আরও পড়ুন- লাচ্চা-সিমাই-চুড়ি-কুর্তায় জমজমাট ইদের বিকিকিনি

আর ঠিক এখান থেকেই যাত্রা শুরু মহেশের। মহেশ সাভানি। পেশায় গুজরাতের প্রসিদ্ধ হিরে ব্যবসায়ী। তিনি সম্পর্কে ঈশ্বরের ভাই হন। ২০০৮-এ দাদা ঈশ্বরের আচমকা এই মৃত্যু আমূল নাড়িয়ে দেয় তাঁকে। দুই ভাইঝির বিয়ে নিজে হাতে দেন তিনি। শুধু তাই নয়, পরিবারের গণ্ডি পেরিয়ে এমন হাজারো পিতৃহীন মেয়ের পরিবারের পাশে দাঁড়ান। এখনও পর্যন্ত তাঁর আর্থিক সাহায্যে ৭০৮ জন মেয়ের বিয়ে হয়েছে। কেবল বিয়েই নয়, দুঃস্থ পরিবারের মেয়েদের পড়াশোনার ভারও অনেক ক্ষেত্রে মহেশ নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। আর এই কারণেই তিনি এখন প্রায় ২ হাজার কন্যার গর্বিত বাবা! অথচ তাঁর নিজের কোনও মেয়ে নেই। আছে দুই ছেলে।

Advertisement

মেয়েদের বিয়ের আগে দাদার ওই মৃত্যু মহেশকে বুঝিয়ে দেয়, এই সমাজে পিতৃহীন কন্যাদের অবস্থা ঠিক কেমন। তাই সেই সব মেয়েদের সাহায্যে এগিয়ে আসেন তিনি। আদর্শ এক বাবা হিসাবে সব দায়িত্ব পালন করে একের পর এক গণ বিবাহের আয়োজন করেন। প্রতিটা বিয়েতে প্রায় চার লাখ টাকা করে খরচও করেন এই ব্যবসায়ী। এ বছরও আর একটি গণ বিবাহের অনুষ্ঠান হবে। সেখানে প্রায় ২৫০ মেয়ের বিয়ে দেবেন মহেশ।

তবে শুধু পিতৃহীন মেয়েদের বিয়ে নয়, তাঁদের পড়াশোনার দেখভালটাও করেন ওই ব্যবসায়ী। এই মুহূর্তে সুরাতের ২৩৮টি স্কুল এবং ১৯টি কলেজে কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রীর পড়াশোনার ভার তাঁর কাঁধেই। তিনি জানিয়েছেন, প্রায় ৮ হাজার ৪০০ স্কুল ছাত্রী এবং ৩৯২ জন কলেজ ছাত্রীর পড়াশোনার যাবতীয় দায়িত্ব তিনিই সামলান। ওই সব ছাত্রীদের দশম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের মাইনে দেওয়ার জন্য একটি বিশেষ তহবিলও গড়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন